ম্প্রতি চায়না দাবি করেছে 38 মিলিয়ন আমেরিকান ডলার পাকিস্তানের থেকে ক্ষতিপূরণ চেয়েছে । কেননা চায়নার বেশ কিছু ইঞ্জিনিয়ার সম্প্রতি মারা যায় পাকিস্তানে। China demand $38 million from Pakistan for dead workers (WION Web Team)। 


পাকিস্তানের এখানে‌ সমস্যা একটাই ‌‌,‌‌যে 38 মিলিয়ন যদি রুপান্তর করা যায় ইন্ডিয়ান রুপিতে তবে সেটা দাঁড়ায় 290 কোটি রুপি। আর এটাকে‌ যদি পাকিস্তানি রুপিতে রুপান্তর করা‌ হয় তবে‌ সেটা দাঁড়ায় 660 কোটি টাকা। তাছাড়াও বলা‌ দরকার এই যে রিপোর্ট এই রিপোর্ট সবার আগে পাবলিশ করে পাকিস্তানের এক মিডিয়া । পাকিস্তানের এক জনপ্রিয় আউটলেট বিজনেস রেকর্ডার (Business Recorder ) এরা লেখে‌ যে  'চীন ক্ষতিপূরণ পরিশোধের সাথে সাথে কাজ পুনরায় শুরু করবে' যার অর্থ দাঁড়ায় যতখন না পাকিস্তান 660 কোটি টাকা পাকিস্তান ক্ষতিপূরণ না দিচ্ছে ততক্ষণ ডাসু হাইড্রপাওয়ার প্রজেক্ট থেমে থাকবে । যেসকল ইঞ্জিনিয়ার মারা গিয়েছিলেন এই দুর্ঘটনায় তাদের পরিবার যেন ক্ষতিপূরণ পায় এই লক্ষ্যে। 

এদিকে পাকিস্তানে অভ্যন্তরে কোন‌ নিউজ পাবলিক হলেও সেটাকে সরকারি ভাবে মান্যতা পায় না। উদাহরণ স্বরূপ বলা যায় যখন ডাসু ড্যাম যাওয়ার সময় একটি বাস এ বোম ব্লাস্ট হলে, পাকিস্তান সরকার বেশ বড় সময় পর্যন্ত বলে গেছে যে এটি কোন বোম ব্লাস্ট ছিল না। ডাসু ড্যাম এর এই ঘটনাকে শুধু অস্বীকারই নয় দাঁড়াও বলে এটি কোন আতংবাদি হামলায় নয়। যখন চায়না প্রচুর পরিমাণে চাপ সৃষ্টি করে এবং একটি তদন্ত কমিটি পাঠাবে বলে চায়না। তারপর প্রকাশ পায় আসল সত্য। আর স্বিকার করে নেয় এখানে বোম ব্লাস্ট হয়েছে। 


পাকিস্তানি মিডিয়ার এখানে এটা বলছে যে, সঠিক তথ্য সূত্র থেকে জানতে পেরেছে চায়না 660 কোটি টাকার ক্ষতিপূরণ চেয়েছে। কাল হতে পারে পাকিস্তান তার ভাবমূর্তি পরিস্কার রাখতে সেটাকে পুরোপুরি অস্বীকার ও করলে তাতে অবাক হওয়ার কিছু নেই । যদি এই সংবাদ আগে আপনি না দেখে থাকেন তবে বলে দি পাকিস্তানের নর্থদান এরিয়ায় এখানে চায়নার ইঞ্জিনিয়ার তৈরি করছি একটি খুবই বড় মাপের হাইড্রোলিক পাওয়ার প্রজেক্ট, ডাসু হাইড্রো পাওয়ার প্রজেক্ট।
 
আর এটি বানানর জন্য পাকিস্তান লোন নিয়েছে বিশ্ব ব্যাংক থেকে ,চায়না থেকে । আর বেশিরভাগ চায়নার যে ইঞ্জিনিয়ার আছে এ তৈরি করছে পুরো ড্যামটিকে । এখন অনেক সময় এটা হয় যে , এই ড্যাম বড় একটি এরিয়া জুড়ে তৈরি হয় । যার জন্য লোক একজায়গা থেকে অন্য জায়গায় ট্রাভেল করা লাগে । কিছু দিন আগে এটায় হয়েছিল চায়নিজ ইঞ্জিনিয়ার একটি বাসে ট্রাভেল করছিল আর ডাসু ড্যামের দিকে যাচ্ছিলেন । রাস্তায় বাসের মধ্যে হয়ে যায় বোম ব্লাস্ট  আর 13 জন লোক মারা যায় এই ঘটনায় । যার মধ্যে নয় জন ছিল চায়নিজ ইঞ্জিনিয়ার 

প্রাথমিকভাবে পাকিস্তান বলে এটা কোন বোম ব্লাস্ট ছিল না । এখানে বাস উল্টে গেছিল এবং তারপর একটি ছোট ব্লাস্ট হয়। এখানে কোন আতঙ্কবাদী সংগঠনে যুক্ত নয়। পরবর্তী সময়ে চায়না প্রচুর চাপ সৃষ্টি করে। যার পর স্বীকার করতে হয় যে এটি বোম ব্লাস্ট। সবথেকে হাসির কত একটা যখন পাকিস্তান স্বিকার করে যে এটি বোম বোম ব্লাস্ট। তখন তার দোষ চাপিয়ে দেয় সোজা Indian Spy Agency Row এর উপর । পাকিস্তান এটা বলা শুরু করে দেয়, যে ভারতে intelligence agency আছে‌ RAW এরা পাকিস্তানি তালিবানদের সাথে হাত মিলিয়ে এই ব্লাস্ট ঘটায় । তবে চিনা সরকার এই সব তথ্য কে মান্যতা দেয় নি অফিসিয়ালি। চিনা মিডিয়া মাঝেসাঝে ভুলভাল স্টেটমেন্ট প্রকাশ করলেও চিনা স্পোকসম্যান Row এর ব্যাপারে কিছু বলেন‌নি । 

এখন পাকিস্তানের উপর সব থেকে বড় সমস্য হল এই যে প্রজেক্ট পুরোপুরি বন্ধ‌ হয়ে পড়ে আছে জুলাই থেকে । আর যদি এইভাবে কাজ বন্ধ থাকে তবে বিশ্ব ব্যাংক থেকে যে লোন নাওয়া আছে ওই লোন কে ন্যায্যতা দিতে সমস্যা হবে । কেননা বিশ্ব ব্যাংক সবসময় প্রজেক্টের স্ট্যাটাস জানান নেয় । কেননা আমরা লোন দিয়েছি ওই প্রজেক্টের কি হল । কতটা কাজ সম্পূর্ণ হল, কতটা বাকি আছে এখনও। তাহলে পাকিস্তান এটাই চাইবে যত তাড়াতাড়ি হোক, যে বাকি চাইনিজ ইঞ্জিনিয়ার আছে পাকিস্তানে এরা পুনরায় কাজ শুরু করুক এই হাইড্রো পাওয়ার প্রজেক্টে।

কিন্তু চায়নার এখানে বক্তব্য যে আমরা 660 কোটি টাকা নেব। কেননা আমাদের দেশের 9 জন কর্মী মারা গিয়েছে। এটা পাকিস্তানের জন্য খুব চিন্তার বিষয়। কেননা শুধুমাত্র 9 জন মারা যেতেই এত বড় মূল্য চোকাতে হবে পাকিস্তানকে। হতে পারে যদি কোন‌ এর পরে অ্যাটাক হয়, এমন না হতেও পারে পাকিস্তান সুরক্ষিত নয় ততটাও । যদি ধরে নি কাল আবারও 15 চায়না কর্মী মারা যায় তবে এই ক্ষেত্রে চীন দাবি করতে পারে 1000 কোটি টাকা । আর এখানে যে আতঙ্কবাদী সংস্থা আছে তারা বুঝে যাবে এই ভাবে পাকিস্তানের অর্থনীতি কে বিধ্বস্ত করা যাচ্ছে। যার জন্য আরও বড় হামলা চালাবে চিনা কর্মীদের উপর । যার ফল সরুপ বড়সড় ক্ষতিপূরণের দাবি করবে চীন‌ যেটাকে ফুলফিল করতে পাকিস্তান অসমর্থ। আর সেজন্য পাকিস্তানি সরকার চীন সরকারের কথাবার্তা চলাচ্ছে‌। যে ক্ষতিপূরণের নামে এত বিরাট অংকের মূল্যের দাবি যেন‌ না করা হয় । 

 
তাছাড়া দ্বিতীয় সমস্যা এটা আসে যে , ধরুন পাকিস্তান এই ক্ষতিপূরণ দিতে রাজিও হয়ে যায় তো এই পয়সা পাবে কোথা থেকে? অবশ্যই বাজেট থেকে পাশ‌ হবে । এখন পাকিস্তানের কাছে এটা নিয়ে সমস্যা যে এ দেশ বর্তমানে নিজে বাজেট তৈরি করে না IMF এর অনুমোদন লাগে প্রত্যেকটি ক্ষেত্রে। আমরা জেনে থাকবেন‌ IMF এর 6 বিলিয়ন ডলারের যে প্যাকেজ সেটা চলছে পাকিস্তানের জন্য। তবে‌ যখন International Monetary Fund  এক দেশকে পয়সা দেয় তখন সেক্ষেত্রে ওই দেশ যে বাজেট বানায় সেটাও IMF অনুমোদন দিয়ে থাকে । যে ইলেকট্রিসিটি ‌‌‌‌‌রেট আছে  সেটা কত বাড়ান‌ হচ্ছে, পেট্রোল- ডিজেলে কত টাকা টেক্স বসাচ্ছো এসব নির্ধারিত করে IMF । পাকিস্তান যদি বলে থাকে 650 কোটি রুপি চায়নাকে ক্ষতিপূরণ দিতে হবে তবে IMF সেটাকে অনুমোদন দেবে না। 


তবে আপনি‌ চায়নার দিক থেকে ভাবলে দেখবেন। তাদের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ এই ক্ষতিপূরণ । চায়নার যে সব কর্মী তারা  উৎসাহিত হবে পাকিস্তানে কাজ করার জন্য। বহু চাইনিজ কর্মী ,আজকের সময় চায়নায় যারা পাকিস্তানে গিয়ে কাজ করতে চায় না নিরাপত্তার কারণে। চয়না এটা চখয় যে পাকিস্তান ক্ষতিপূরণ এমন মাত্রায় দিক যে চাইনিজ কর্মী অনুভব করুক যে ঠিকই আছে‌। হতে পারে জীবনের থেকে‌ মূল্যবান কিছু হয় না তবে যদি‌ হয়ে যায় কোন‌‌ দুর্ঘটনা তবে বহু মূল্যের ক্ষতিপূরণের ব্যবস্থা ও ও থাকবে।

আর এটা মনে রাখবেন‌,‌‌‌‌‌‌চায়নার মাস্টার প্লানে 2022-2023 সম্পূর্ণ  5 লক্ষ চিনা নাগরিক পাকিস্তানে‌ আসে CPEC Project এর জন্য (FPK august 21,2018)। এদের যে দীর্ঘমেয়াদী উপনিবেশিক পরিকল্পনা। ধিরে ধিরে চীনা নাগরিক বাড়াবে পাকিস্তানে । যার‌ জন্য ‌‌‌সবথেকে উপকারী ফল হবে‌ পাকিস্তান যথাযত ক্ষতিপূরণ দিয়ে চায়নার মুখ বন্ধ রাখে । 

Post a Comment

নবীনতর পূর্বতন