মরা আজ আর গল্প বলতে  চলেছি, তিনি যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে গোল্ড মেডেলিস্ট। অথচ আমরা অনেকেই এই খবরটা জানিনা। আমরা তাকে জানি গীতিকার, সুরকার এবং গায়ক হিসেবে। একজন সফল ইঞ্জিনিয়ার থেকে একজন সফল গায়ক এই হয়ে ওঠার জার্নিটা চলুন আজকে জানা যাক।


ছেলেটির জন্ম 1982 সালে কলকাতায়, কোলকারাই এক নামি স্কুল থেকে পড়াশুনা করে সে। বাবা ডাক্তার ছিলেন তাই বরাবরই চেয়েছিলেন' ছেলে ও ডাক্তার হোক। ছেলের আগ্রহ যদিও ইঞ্জিনিয়ারিং এর প্রতি বেশি ছিল। জয়েন্ট এন্ট্রান্স পরীক্ষায় পাশ করার পর সে ইঞ্জিনিয়ারিং এ ভর্তি হয় যাদবপুরে। সেখান থেকে ইলেকট্রনিক্স অ্যান্ড কমিউনিকেশন ইঞ্জিনিয়ারিং এ গোল্ড মেডেল লাভ করার পর, সে ব্যাঙ্গালোর একটি কোম্পানিতে চাকরি করতে চলে যায়। সব কিছুই স্বাভাবিক নিয়মে চলছিল তবে যেই ইচ্ছটা সে নিজের মধ্যে চেপে রেখেছিল। তাহলো গান শিখবার শখ। বারো তেরো বছর বয়স থেকেই ছেলেটির গানের প্রতি ঝোঁক ছিল অফুরান। কিন্তু নিজের ভবিষ্যৎ ক্যারিয়ার হিসেবে মিউজিককে বেছে নেওয়ার মতো সাহস কিছুতেই করতে পারেনি সে।

আরও পড়ুন:ভারতের সবথেকে ধনী ভিখিরিদের তালিকা ! জানেন এদের মাসিক আয় কত ?

দলছুট হয়ে পড়বার ভয় তাকে বরাবরই তাড়িয়ে বেড়াতো। তাই হয়তো সমাজের সাথে তাল মিলিয়ে সে এগিয়ে চলছিল। ব্যাঙ্গালোরে থাকাকালীন অনেকবার ইচ্ছে হলেও একটা ভালো চাকরি ছেড়ে দিয়ে মিউজিক নিয়ে এগিয়ে যেতে পারছিল না ছেলেটা। সিদ্ধান্তটা নিতে ছয় বছর সময় লেগে গেল তার। অবশেষে 2010 সালে চাকরি ছেড়ে সে ফিরে এল কলকাতায়। গীতিকার হিসেবে নিজের নতুন ক্যারিয়ার শুরু করল। সে বছরই রিলিজ হয় অটোগ্রাফ নামের সিনেমাটি। সেখানে তাঁর গাওয়া আমাকে আমার মত থাকতে দাও এবং তার লেখা বেঁচে থাকার গান ফ্যানেদের মধ্যে রীতিমতো আলোড়ন সৃষ্টি করে। তখন থেকেই আর কখনো পিছনে ফিরে তাকাতে হয়নি তাকে। তার নাম অনুপম রায় যিনি শুধুমাত্র একজন গায়ক নন, তার গানগুলির অধিকাংশ তার নিজেরই লেখা। গানগুলোতে তিনি নিজেই সুর দিয়ে থাকেন। সিনেমার জন্য গাওয়া গানের পাশাপাশি তার একক এ্যালবাম গুলি ও অত্যন্ত জনপ্রিয়তা লাভ করেছে।

 

হেমলক সোসাইটির- এখন অনেক রাত, প্রাক্তন সিনেমার- তুমি যাকে ভালোবাসো, জুলফিকারের- আমি আজকাল ভালো আছি, বেলা শেষের- ওভাবে কেন, গানগুলির মতো আরো অসংখ্য জনপ্রিয় গান রয়েছে তাঁর সৃষ্টির তালিকায়। চলো পালটাই সিনেমায় মিউজিক ডিরেক্টর হিসেবে ডেবিউ করেন তিনি। এরপর বেশ কিছু বাংলা সিনেমায় মিউজিক ডিরেক্টর হিসেবে ফ্যানেদের তিনি উপহার দিয়েছেন অসাধারণ সব গান। 2015 সালের হিন্দি সিনেমা পিকুর সংগীত পরিচালনার মাধ্যমে বলিউড ফিল্ম জগতে হাতেখড়ি হয় তার। এই সিনেমার আবহসংগীত এর জন্য ফিল্মফেয়ার অ্যাওয়ার্ড পান অনুপম। এছাড়া তুমি যাকে ভালোবাসো গানটির জন্য যিনি জিতে নেন 64তম ন্যাশনাল ফিল্ম এওয়ার্ড। এক ইন্টারভিউতে অনুপম বলেন, দিনের শেষে মানুষ কেবল একটু শান্তি পেতে চায় আর তাই সারা দিনে আমরা কি কাজ করছি বা উপার্জনের পথ হিসেবে কোন কাজ কে বেছে নিচ্ছি তা এক অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার। যদি আমরা সেই কাজকেই  উপার্জনের রাস্তা হিসেবে বাছতে পারি যে কাজ আমাদের অন্তরকে শান্তি দেয়।তাহলে হয়তো আমাদের কখনোই কাজ করতে ক্লান্তি আসবে না। জীবনের প্রতি কখনো বিরক্ত বোধ করবো না আমরা। ভালো থাকুন অনুপম রায় আপনার গান আরও লক্ষ লক্ষ মানুষের হৃদয় স্পর্শ করুক।

Cradit-UltiMad Media youtube

আরও পড়ুন:সরকারি স্কুলের ইংরেজির শিক্ষকতা ছেড়ে বাংলা ব্যান্ডের রকস্টার !

 

Post a Comment

নবীনতর পূর্বতন