কটাই ইন্টারভিউ নেওয়ার সময়, যখন ওয়ারেন বাফেটকে ইয়ংস্টারদের জন্য একটা এডভাইস দিতে বলা হয়েছিল। ওয়ারেন বাফেট তখন একটাই কথা বলেছিলেন 'Read a lot'। ওয়ারেন বাফেট বই পড়ার এই অভ্যেস কে তার সাফল্যের রহস্য বলে মনে করেন। ওয়ারেন বাফেট হোক বা বিল গ্রেডস্ হোক এনারা সবাই বই পড়াকে সফলতা অস্ত্র বলে মনে করেন। কিন্তু এটা ভাবার বিষয় কেন বেশির ভাগ সফল ব্যক্তিরা বই পড়াটাকে এতটা গুরুত্ব দেন। উত্তরটা খুবই সহজ, আপনি যদি বিল গেট্স, ওয়ারেন বাফেট, এলন মাস্ক, নেপোলিয়নের হিলের মতো সফল ব্যক্তিদের কাছ থেকে শিখতে চান কিভাবে নিজের জীবনে আরও উন্নতি করা যায় তাহলে আপনি সরাসরি তাদের কাছ থেকে শিখতে পারবেন না। কারণ এই সফল ব্যক্তিদের কাছে আপনার কাছে বসে আপনাকে এইসব কিছু শেখানোর সময় নেই। কিন্তু তারা তাদের সারা জীবনের নলেজ ও এক্সপিরিয়েন্স বইয়ের মাধ্যমে আপনাদের সামনে তুলে ধরেছেন। তাদের লেখা বই পড়ে আপনি তাদের জীবন থেকে অনেক কিছু শিখতে পারবেন। 


শুধু তাই নয় এমন অনেকেই আছে যারা বই পড়ে অন্যের ভুল থেকে শিক্ষা নেয়। যাতে সেই ভুলগুলো আবার তারা নিজেরা না করে। বই পড়ার বেনিফিট জেনে সফল ব্যক্তিদের এডভাইস নিয়ে অনেকেই অনেক সময় বই পড়তে আগ্রহ তো দেখায়। কিন্তু একপাতা পড়ার পরই তাদের ঘুম পেয়ে যায়। কিছু মানুষ আছেন যারা ভালো বইয়ের কথা শুনে হুট করে বইটা কিনে নেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত বইটা পড়ে শেষ করতে পারেন না। আপনার কি এই একই সমস্যা আছে? আপনিও কি বই পড়তে চান, কিন্তু পড়তে পারেন না? যদি এর উত্তর হ্যাঁ হয়। তাহলে আপনি একেবারে সঠিক জায়গায় আছেন। কারণ আজকে জীবন সমস্যার সমাধানের এই আলোচনায়। আমি আপনাকে শুধু বই পড়ার বেনিফিট সম্পর্কেই বলবোনা। কিভাবে আপনি একটা পুরো বই পড়ে শেষ করবেন তাও শেখাবো। আপনি যদি সত্যিই বই পড়তে আগ্রহী হন তাহলে অবশ্যই এই প্রতিবেদন টি পুরোটা পড়ুন।



ওয়ারেন বাফেট এর কথা যদি বলি, ওয়ারেন বাফেট 11 বছর বয়স থেকে ফাইন্যান্স রিলেটেড বই পড়া শুরু করেন। তিনি এত বেশি বই পড়তে যে তার শহরের যত লাইব্রেরি ছিল‌ সেগুলিও তার কাছে কম বলে মনে হতো। শুধু তাই নয় 91 বছর বয়সী ওয়ারেন বাফেট এখনো প্রতিদিন 500 পৃষ্ঠা করে পড়েন। তাই তার পড়ার কোন শেষ নেই। কিন্তু কেন বেশিরভাগ মানুষ বই পড়তে পারে না? হয়তো এই প্রশ্ন আপনার মনেও আসতে পারে। উত্তরটা খুবই সহজ। আর সেটা হলো যে যখন কোন বই পড়ার কথা হয় তখন লোকেরা বই পড়াকে একটা বিশাল কাজ বলে মনে করে। আপনি আমাকে বলুন আপনাকে ইউটিউবে ভিডিও দেখতে বা পাবজি ফ্রী ফায়ার গেম খেলা টা কোন বিশাল বড় কাজ বলে মনে হয় না তো। কারণ আপনি কাজগুলো করে মজা পান কিন্তু যখনই বই পড়তে বলা হয় তখনই সবাই খুব সিরিয়াস হয়ে যায় বই পড়ার নাম শুনলেই মনে নানা ধরনের অদ্ভুত প্রশ্ন আসতে থাকে কোন বই পড়বো, কতক্ষণ করে পড়বো, কিভাবে পড়বো, ফিজিক্যাল বই না ই-বুক, কোনটা পড়বে, এমন অদ্ভুত অদ্ভুত প্রশ্ন বই পড়ার আগেই আমাদের মনে আসতে শুরু করে দেয়। যার কারণে আমরা পড়তে বসতে পারি না। আর কোনরকমে পড়তে বসলে ও দুই মিনিটের বেশি পড়তে পারি না। তাই আমি আপনাকে বলতে চাই যে আপনি যদি সত্যিই বই পড়ার হাবিট তৈরি করতে চান তাহলে সবার আগে আপনাকে সিরিয়াসলি বই পড়া বন্ধ করতে হবে। আর অন্যান্য হাবিট গুলোর মতই চিল করতে করতে অল্প অল্প করে বই পড়ার অভ্যাস করতে হবে। এমন নয় যে প্রত্যেক সপ্তাহে একটা করে বই পড়ে শেষ করতে হবে প্রতিদিন একটু একটু করে কিছুক্ষণ বই পড়েও আপনি সহজেই এই ভালো অভ্যাস গড়ে তুলতে পারেন। বই পড়তে না পারার দ্বিতীয় বড় কারণ হল বই পড়ার সময় না পাওয়া ।রোজকার ব্যস্ত জীবনে ন'টা থেকে পাঁচটার মধ্যে বই পড়ার জন্য সময় বের করা অনেকের পক্ষেই সম্ভব হয় না। এমনকি আজকাল তো কিছু মানুষ তাদের so-called বিজি সিডিউল নিয়ে এতটাই ব্যস্ত থাকে যে তাদের খাবার খাওয়ার সময় থাকে না। আপনি যদি এই ধরনের জীবন-যাপনে অভ্যস্ত হোন তাহলে আপনাকে একটু থেমে গিয়ে ভাবতে হবে। কারণ আপনার জীবন আপনি যেমনটা ভাবছেন তা মোটেও নয় বরং আপনার জীবন চলছে অটোপাইলট মডে।

আরও পড়ুন:পাইথন প্রোগ্রামিং কি ? আর আপনি পাইথন প্রোগ্রামিং দিয়ে কি করতে পারবেন? আর কেন পাইথন এতটা জনপ্রিয়?

আপনি প্রতিদিন একটা অটো পাইলট সময়সূচী অনুসরণ করছেন। যার কারণে আপনার হাতে সময় থাকে না। কিন্তু আপনি সচেতনভাবে আপনার সময়সূচীর দিকে মনোযোগ দিয়ে দেখলে বুঝতে পারবেন। যে আপনি যতটা ভাবছেন ততটা ব্যস্ত আপনি নন। কারণ সারাদিনের ব্যস্ততার পরও আপনার হাতে এক থেকে দুই ঘন্টা বাঁকি থাকে এখানে ওখানে নষ্ট হয়। এই সট ফ্রি টাইম গুলোকে টাইম পকেট বলা হয়। যেমন বাড়ি থেকে অফিসে পৌঁছানো পর্যন্ত এই টাইম পকেট আপনি চাইলে আপনার কাজে লাগাতে পারেন। যদি আপনি সেই সময়টা বই পড়ার জন্য ব্যবহার করেন। একটু মনোযোগ দিয়ে লক্ষ্য করলেই আপনি আপনার ব্যস্ত সময়সূচীতে এরকমই অনেক টাইম পকেট দেখতে পাবেন। তাই নিজেকে এটা বলা বন্ধ করুন যে আপনার কাছে সময় নেই। আর বই পড়ার জন্য এই ধরনের টাইম পকেট কে কাজে লাগান। এবার সবশেষে এই প্রশ্নে আসা যাক বই পড়ার সঠিক পদ্ধতি কি? কারণ এটাই সবথেকে বড় কারন যে বেশিরভাগ লোক কখনোই বই পড়া শুরু করতে পারে না। অনেকেই বই পড়ার সঠিক পদ্ধতি সম্পর্কে জানতে চাই।

 

তবে যদি আমি আপনাকে বলি যে বই পড়ার কোন সঠিক পদ্ধতি নেই। আপনি যেভাবে পড়ছেন সেটাই সঠিক পদ্ধতি। কেউ কেউ একটা বই শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত পড়ে। আবার কেউ কেউ কোন বইয়ের মাঝখান থেকে কয়েকটা চ্যাপ্টার পড়ে। তাই কিভাবে বই পড়ছেন সেটা ম্যাটার করে না। রিডিং হ্যাবিট ডেভেলপ  করার জন্য সব থেকে জরুরি হলো রোজ অল্প করে হলেও বইপড়া। এই প্রতিবেদনটা‌ পড়ার পর এখন আশা করি আপনি বুঝতে পেরেছেন যে ধনী ব্যক্তিরা কেন এত বই পড়েন এই প্রতিবেদনে আমি বই পড়ার কয়েকটা প্রাক্টিক্যাল উপায় বলেছি যেগুলো ফলো করে আপনি চাইলে সহজেই পড়ার অভ্যাস গড়ে তুলতে পারেন। পতিবেদনটি ভালো লাগলে অবশ্যই কমেন্ট বক্সে জানাবেন আপনার মতামত। 


আরও পড়ুন: Mutual Fund কি? আমাদের কী Share Market Investment করা উচিত?

Post a Comment

নবীনতর পূর্বতন