'Mutual Funds Sahi Hai' বাহ খুব ভালো কথা। Mutual fund investments are subject to market risks. Please read the offer document carefully before investing কি বলেন! এই মাত্ফার বললেন সেহি হে আবার বলছেন রিস্ক হে। এটা কেমন কথা হলো দাদা?  তাহলে কি মিউচুয়াল ফান্ড সত্যি মে সেহি হে নাকি অন্দরমে অন্য কোন গল্প হ্যাঁ?



করোনার প্রকপে বিশ্বজুড়ে শেয়ার মার্কেটের ধ্বস নামার পর। যেহেতু সমস্ত কোম্পানির শেয়ার প্রাইস অত্যন্ত সস্তা হয়ে দাঁড়িয়েছে। তাই এখন অনেকেই এই কনফিউশনে ভুগছেন যে এই সময় মিউচুয়াল ফান্ডের হাত ধরে শেয়ার মার্কেটে ইনভেস্ট করাটা ঠিক হবে কিনা। যদি আপনিও তাদের মধ্যেই একজন হন তাহলে আজকের লেখাটি শেষ অব্দি পড়তে থাকুন, কারণ আজকের এই প্রতিবেদনটিতে আপনি জানতে পারবেন মিউচুয়াল ফান্ড জিনিসটা ঠিক কি? কিভাবে কাজ করে? আদৌও সুরক্ষিত কিনা, এর কি কি ভালো এবং কি কি খারাপ দিক রয়েছে এবং ফাইনালি পর্টিকুলারলি আপনার জন্য মিউচুয়াল ফান্ড কি আসলেই সেহি হে নাকি গালাত হে?


এক কথায় বললে মিউচুয়াল ফান্ড এর ব্যাপারে এ টু জেড আপনি একটা পতিবেদনের মাধ্যমে পুরোটা জানতে চলেছেন। তাই অবশ্যই লেখাটি শেষ অব্দি একবার মন দিয়ে পড়ুন। তো প্রথমেই আসি মিউচুয়াল ফান্ড জিনিসটা কি? আর এটি কিভাবে কাজ করে? ভাবুন আমার এই যে কোম্পানি জীবন-সমস্যার সমাধান এবং অস্থাবর সমস্ত সম্পত্তি মিলিয়ে টোটাল মূল্য দাঁড়ায় 1,000 টাকা। এবার আমি কি করলাম আমার এই পুরো কোম্পানি থেকে দশ ভাগে ভাগ করে অর্থাৎ 1000/10 =100 টাকা প্রতি শেয়ার দরে শেয়ার মার্কেটের লিস্ট করে দিলাম। অর্থাৎ কেউ যদি আমার কোম্পানি টোটাল দশটা শেয়ারের মধ্যে ন্যূনতম একটা শেয়ার কিনতে চায় তাহলে তাকে 100 টাকা দিয়ে কিনতে হবে। এবার আপনি চান আমার কোম্পানির শেয়ার কিনতে। কিন্তু আপনার পকেটের রয়েছে মাত্র 10 টাকা। এদিকে আমার কোম্পানির ন্যূনতম একটা শেয়ারের দাম 100 টাকা। ফলে আপনার ইচ্ছা থাকলেও আপনার কাছে 90 টাকা কম থাকায় আপনি কিনতে পারছেন না। এবার আপনার মতই আর 9 জন লোক রয়েছে যাদের ওই একই সমস্যা অর্থাৎ তারাও সবাই আমার কোম্পানির‌ শেয়ার কিনতে চায়

 

কিন্তু তাদের পকেটে‌ রয়েথে 10 টাকা করে। এবার মনে করুন Chalak Chetan আপনাদের 10 জন কেই চেনে এবং এই পুরো গল্পটা জানে। তো Chalak chetan  তখন কী করলো বুদ্ধি করে Chalak Chetan Mutual Fund খুলে বসলো। আর আপনাদের 10 জনের কাছ থেকে 10 টাকা করে নিয়ে টোটাল 100 টাকা জোগাড় করে আমার কোম্পানির একটা শেয়ার কিনে নিল। এই যে চালাক চেতন  10 জনের কাছ থেকে টাকা কালেক্ট করার কষ্টটা করল তারপর শেয়ারটা কেনার কষ্টটা করল এর পারিশ্রমিক হিসেবে চালাক চেতন শর্ত কি দিল। যে আপনারা যখন আপনাদের টাকা তুলে নেবেন তখন আপনারা প্রত্যেকে যে টাকাটা পাবেন তার ওয়ান পারসেন্ট করে টাকা আপনাদের কে চালাক চেতনকে ওর পারিশ্রমিক হিসেবে দিতে হবে। অর্থাৎ চালাক চেতন মিচুয়াল ফান্ডের এক্সপেন্স রেশিও হলো 1%। এবার 10 বছর পর দেখা গেল আমার কোম্পানির প্রতিটি শেয়ারের মূল্য 100 টাকা থেকে বেড়ে হয়ে দাঁড়ালো 200 টাকা। অর্থাৎ আপনার 10 টাকা বের হয়ে দাঁড়ালো 20 টাকা। এবার আপনি যখন নিজের টাকা তুলে নিতে চাইলেন তখন শর্ত অনুযায়ী আপনি যে টাকাটা পাচ্ছেন 20 টাকা। সেই 20 টাকার 1% মানে 20 পয়সা চালাক চেতন তার নিজের পারিশ্রমিক হিসেবে কেটে নিয়ে হাজার 19 টাকা 80 পয়সা আপনাকে ফেরত দিয়ে দিলো। মানে 10 টাকা খাটিয়ে 10 বছর পর আপনি ফেরত পেলেন 19 টাকা 80 পয়সা।



আশাকরি মিউচুয়াল ফান্ড জিনিসটা কি এবং কিভাবে কাজ করে এই গল্পের মাধ্যমে আমি আপনাকে বোঝাতে পারলাম। এবার পরের প্রশ্নে আসি মিউচুয়াল ফান্ড ঠিক কতখানি সুরক্ষত। এই যে আপনি চালাক চেতনের হাতে আপনার কষ্ট করে রোজগার করা 10 টাকা তুলে দিলেন। কি ভরসা আছে যে চালাক চেতন সেটা নিয়ে পালিয়ে যাবে না। এখানে ব্যাপারটা হল চালাক চেতনকে মিউচুয়াল ফান্ড খোলার আগে Securities and Exchange Board of India (SEBI)  এবং association of Mutual Funds in India (MFI) এই দুটি সরকারি সংস্থার কাছ থেকে লাইসেন্স নিতে হয়েছে এবং এই দুটি সংস্থা প্রতিনিয়ত চালাক চেতনকে মনিটর করতে থাকছে। তাই সব টাকা নিয়ে পালিয়ে যাওয়া কোন ব্যাংকে টাকা রাখলে আপনার টাকা ঠিক যতখানি সুরক্ষিত, কোন মিউচুয়াল ফান্ডে আপনার টাকা ঠিক ততোখানি হিসেব বলে আপনি ভাবতে পারেন।

 


এরপর যদি  ইন্টারেস্ট দিক থেকে ব্যাংকের সাথে মিউচুয়াল ফ্রেন্ড কে তুলনা করা হয়, তবে কি আপনি একটা ফিক্স পার্সেন্টেজ ইন্টারেস্ট রেট পাবেন। কিন্তু মিউচুয়াল ফান্ডের টাকা শেয়ার মার্কেটে লাগানো হবে। তাই এখানে কোন ফিক্স পার্সেন্টেজ ইন্টারেস্ট রেট আপনি পাবেন না। শেয়ারের দাম যেমন ওঠানামা করবে সেই অনুযায়ী ইন্টারেস্ট রেট পাল্টাতে থাকবে। এই জন্যই এই কথাটা বলা হয় মিউচুয়াল ফান্ড সাবজেক্ট মার্কেটরিস্ক।

আরও পড়ুন: চালাকি করে Credit Card use করতে শিখুন, DEBT TRAP থেকে কি করে বেরোবেন !

এবার আসি এর কি কি ভালো দিক রয়েছে! আর কি কি খারাপ দিক রয়েছে! ভালো দিক বলতে  সিম্প্লিসিটি মিউচুয়াল ফান্ড জিনিসটা কি কিভাবে কাজ করে সেটা বোঝা কোন হাতি ঘোড়া না। যে কেউ চাইলে খুব সহজেই পুরো ব্যাপারটা বুঝতে পারে। অ্যাক্সেসিবিলিটি মিউচুয়াল ফান্ডে ইনভেস্ট করা আজকের দিনে ভীষণ সহজ। ঘরে বসে মাত্র কয়েক মিনিটেই কেউ চাইলে সরাসরি মিউচুয়াল ফান্ডে ইনভেস্ট করতে পারে। উচ্চমানের রিটার্ন মিউচুয়াল ফান্ড ক্ষেত্রে ইন্টারেস্ট রেট ব্যাংকের মতো ফিক্স না হলেও বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই দেখা যায় মিউচুয়াল ফান্ড ইন্টারেস্ট রেট ব্যাংকে তুলনায় বেশি হয়ে দাঁড়ায়‌। যেখানে ব্যাংক মোটামুটি 7%  ইন্টারেস্ট পাওয়া যায় সেখানে মিউচুয়াল ফান্ড মুটামুটি রিটার্ন 10-15 % হয়ে থাকে‌। COMPOUND EFFECT  খুব সহজে বললে মাত্র 1 টাকা থেকে শুরু করে আগামী 30 দিন যদি রোজ আপনার টাকা ডাবল হতে থাকে তাহলে মাত্র 30 দিন পরে সেই এক টাকা বেড়ে হয়ে দাঁড়ায় প্রায় 54 কোটি টাকা‌। আর এই কম্পাউন্ড এফেক্ট এর প্রিন্সিপাল মিউচুয়াল ফান্ডে কাজ করে।  DIVERSIFICATION যখন আপনি মিউচুয়াল ফান্ডের মধ্যে দিয়ে শেয়ার মার্কেটে ইনভেস্ট করবেন তখন আপনার পুরো টাকাটা কোন একটা বা দুটো কোম্পানিতে না বরং বিভিন্ন সেক্টরের বিভিন্ন কোম্পানিতে অল্প অল্প করে ভাগ হয়ে ইনভেস্ট হয়ে যাবে। ফলে কিছু কোম্পানি লসে গেলেও অন্য কোম্পানিগুলো লাভ হয়ে যাওয়াতে পরিপূর্ণ ভাবে বড়লোক হওয়ার চান্স অনেকখানি কমে যায়। VARIETY আপনি লো মিডিয়াম হাই যেরকম রিক্স নিতে চান। সেই অনুযায়ী বিভিন্ন টাইপের মিউচুয়াল ফান্ডে আপনি আপনার ইচ্ছামত ইনভেস্ট করতে পারেন। AFFORDABILITY  মাত্র 500 টাকা থেকে আপনি মিউচুয়াল ফান্ডে ইনভেস্ট করতে শুরু করতে পারেন। LOW EXPENSE স্টক মার্কেটে নিজে পার্সোনালি সরাসরি ইনভেস্ট করতে চাইলে আপনাকে ট্রেডিং + ডিম্যাট অ্যাকাউন্ট ওপেন করতে হবে। ফলে‌ প্রত্যেক ট্রানজেকশনে Brokage Charge তো আছেই সাথে Annual Maintenance charge চার্জ ও আপনাকে পে করতে হবে। অন্যদিকে মিউচুয়াল ফান্ডে যদি আপনি ডাইরেক্ট ইনভেস্টমেন্ট করেন তাহলে maintenance charge দুটোর কোনটাই আপনাকে বহন করতে হবে না। শুধু ফান্ডের যে Expense Ratio সেটা আপনাকে দিতে হবে। আর বেশিরভাগ মিউচুয়াল ফান্ডের ডাইরেক্ট প্লেনের ক্ষেত্রে এই এক্সপেন্স রেশিও 1%  এর নিচে হয়। PROFESSIONAL MANAGEMENT স্টক মার্কেটে হাজার হাজার কোম্পানির মধ্যে কোন কোম্পানির শেয়ার প্রাইস ফিউচারে বাড়তে চলেছে সেটা আমার আপনার মত সাধারন মানুষের তুলনায় একজন শেয়ার মার্কেটের এক্সপার্ট অবশ্যই বেটার প্রেডিক্ট করতে পারবেন। প্রতিটা মিউচুয়াল ফান্ডে এক বা একাধিক লোক ফান্ট ম্যানেজার হিসেবে নিযুক্ত থাকেন। যারা এক একজন শেয়ার মার্কেটের এক্সপার্ট। ফলে সমস্ত রিচার্জ এবং অ্যানালাইসিস এগুলো আপনার হয়ে একটা এক্সপার্ট টিম করে দেয়। তাও মাত্র 1% Expense Ratio চার্জ করে। FLEXIBILITY মিউচুয়াল ফান্ড মূলত দুই ধরনের হয় open-ended Close-ended। open-ended Fund থেকে ব্যাংকের সেভিংস একাউন্টের মতই আপনি যখন ইচ্ছা যেটুকু ইচ্ছা আপনার টাকা তুলে নিতে পারেন। তবে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে যদি আপনি 365 দিনের আগে আপনার টাকা তুলে নিতে চান সেক্ষেত্রে আপনাকে Exit Load হিসেবে 1%এর মতো টাকা চার্জ দিতে হয়। আর যদি Close-ended মিউচুয়াল ফান্ড হয় তাহলে সেক্ষেত্রে একটা লকিং পিরিয়ড থাকে। উদাহরণস্বরূপ যদি লকিং পিরিয়ড 3 বছরের আগে তাহলে আপনি আপনার টাকা একবার সেই মিউচুয়াল ফান্ডে ইনভেস্ট করে দিলে তিন বছরের আগে আর তুলতে পারবেন না। এই জন্যই এই লাইনটা বলা হয় please read the offer document carefully before investing।


অনেক ভালো দিক বলা হয়ে গেল এবার একটু খারাপ দিকগুলি বলি।

 

মিউচুয়াল ফান্ড এর খারাপ দিক বলতে নাম্বর ওয়ান Risk মিউচুয়াল ফান্ডের আপনার টাকা শেয়ার মার্কেটে ইনভেস্ট হবে তাই রিস্ক তো সবসময় একটা থেকেই যায়। LIMITATION ভারত সরকারের নিয়ম অনুযায়ী কোন মিউচুয়াল ফান্ড ম্যাক্সিমাম 10% বেশি ক্যাশ নিজের কাছে হোল্ড করে রাখতে পারে না। ফলে কি হয় মার্কেট যখন উঁচুতে চলছে সেই সময়ও যদি কোন ফান্ডে ক্যাশ ফ্লো বাড়তেই থাকে তাহলে লস হতে পারে জানা সত্ত্বেও ফান্ড ম্যানেজারকে বাধ্য হয়ে বেশি দামি সেই সময়ই শেয়ার কিনে ক্যাশ রিলিজ করে ফেলতে হয়। অন্যদিকে যেমন ধরুন এখন যেমন মার্কেট নিচুতে  চলছে এই সময় যদি ফান্ডে ক্যাশ ফ্লো না বাড়ে তবে লাভ হতে পারে জানা সত্ত্বেও ফান্ড ম্যানেজার কম দামে বেশি করে নতুন শেয়ার কিনে রাখতে পারেনা। নম্বর থ্রি SELF-GUIDED কোন মিউচুয়াল ফান্ডে কখন ঢোকা উচিত, আর কখন বেরিয়ে আসা উচিত সেটা আপনাকেই ডিসাইড করতে হবে। ফান্ড ম্যানেজারের কাছে সেই পাওয়ার নেই যে সে আপনাকে গাইড করবে কারণ ফান্ড ম্যানেজারের কাছে শুধু নিজের ইচ্ছায় শেয়ার বাইঃ করার পাওয়ার টুকু থাকে। কিন্তু যতক্ষণ না আপনি নিজে থেকে আপনার টাকা ফেরত না চাইছেন। ততক্ষন অবধি ফান্ড ম্যানেজার শেয়ার সেল করে মার্কের থেকে আপনার টাকা বার করে আনতে পরবে না। ফলে মার্কেটে ধ্বস নামলেও তখনও যদি আপনি আপনার টাকা ফেরত না চান তবে ফান্ড ম্যানেজারকে চুপচাপ হাত পা গুটিয়ে বসে থাকতে হবে।


তবে এবার চলুন দেখে নিই আপনার জন্য মিউচুয়াল ফান্ড সত্যি কি যথাযথ। মিচুয়াল ফান্ড আপনার জন্য তখনই জরুরী যখন নাম্বার ওয়ান আপনি শেয়ার বাজার সম্বন্ধে বেসিক নলেজ টুকু রাখেন। যার অর্থ হলো কোন মিউচুয়াল ফান্ড আপনার জন্য সঠিক সেটা আপনি বাছতে জানেন এবং কখন মার্কেট হওয়া উচিত কখন বেরিয়ে আসা উচিত সেই নলেজ টুকু আপনি রাখেন। নাম্বার টু আপনি যে টাকাটা ইনভেস্ট করতে চলেছেন সেটা আপনার কোন এমার্জেন্সি ফান্ড হিসেবে রাখা কোন টাকা না। ফলে সেটাতে কম বেশি লস হলেও আপনার প্রতিনিয়ত দৈনন্দিন জীবনকে প্রভাবিত করবে না। নাম্বার থ্রি আপনার কাছে প্রত্যেকদিনের শেয়ার বাজার ওঠানামা করার। বিভিন্ন শেয়ার এনালাইসিস করার মত সময় দক্ষতা এবং ইচ্ছা এই তিনটে কোনটাই নেই। কিন্তু আপনি শেয়ার মার্কেট টাকা ইনভেস্ট করতে চান।

একমাত্র এই তিনটি পদ্ধতির মধ্যে যদি সবগুলি আপনার জন্য প্রযোজ্য হয়। তবে আপনার জন্য মিউচুয়াল ফান্ড যথাযথ। নয়তো আমার মতে ভুল পদক্ষেপ।

আরও পড়ুন:শেয়ার মার্কেটের খেলাটা বুঝতে শিখুন , শেয়ার বাজার কোন জুয়া না !

 

1 মন্তব্যসমূহ

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

নবীনতর পূর্বতন