খনো তিনি সমালোচিত হয়েছেন, ম্যাট গালা মতো ইভেন্টে অদ্ভুত পোশাক পড়ে হাজির হওয়ার কারণে, কখনও বা নিজের থেকে কম বয়সী ছেলেকে বিয়ে করার জন্য ট্রল্ড হয়েছেন সোশ্যাল মিডিয়ায়। কিন্তু তার পরেও তিনি প্রতিটি মানুষের সামনে এসে দাঁড়িয়েছেন জলজ্যান্ত ইনস্পিরেশন হয়ে। চলুন আজ তার গল্পটা শুনে নেওয়া যাক।


মেয়েটার জন্ম হয়েছিল 1982 সালের 18 জুলাই জামশেদপুরে। বাবা-মা দুজনেই ভারতীয় আর্মির ফিজিশিয়ান ছিলেন। চাকরিসূত্রে তাদের দুজনকে ঘুরে বেড়াতে হতো দেশের বিভিন্ন রাজ্যে। তাই মেয়েটিকে পড়াশোনা করতে হয়েছে কখনো লাখনাও কখনো বা বরেলিতে থাকতে হয়েছে পুনে, দিল্লি, চন্ডিগড় কিংবা লাদাখের মধ্যে শহরে। তার বয়স যখন 13 পড়াশোনার জন্য সুদূর আমেরিকায় একটি আত্মীয়ের বাড়িতে চলে যায় সে।সেখানে এসে শিখতে শুরু করে ওয়েস্টিন ক্লাসিক্যাল মিউজিক ও কত্থক। প্রথম প্রথম ভালো লাগলেও ভারতীয় হওয়ার দরুন কিছুদিনের মধ্যেই তার গায়ের রং নিয়ে শুরু হয়ে যায় ব্যাঙ্গ বিদ্রুপ।

 

 ক্লাসমেটরা তাকে ব্রাউনি বলে ডাকত, তাদের টিটকিরি আর তামাশায় রোজ বাড়িতে এসে কান্নায় ভেঙে পড়তো লাজুক মেয়েটি। ভারতে ফিরে এসে সে ভর্তি হয় বরেলির একটি আর্মি স্কুলে। মায়ের উদ্যোগে এই স্কুলে হওয়া একটি বিউটি কনটেস্ট এ পার্টিসিপেট করে মেয়েটা এবং অদ্ভুতভাবে সবাইকে অবাক করে দিয়ে কনটেস্ট জিতে যায় সে। 18 বছর বয়সে আবারও মায়ের আবদারে অংশগ্রহণ করে ফেমিনা মিস ইন্ডিয়া কনটেস্টে। এরপর সোজাসুজি মিস ওয়ার্ল্ড কম্পিটিশন শেষে যখন বিজয়ীর শিরোপা তুলে দেওয়া হচ্ছিল তার মাথায় মেয়েটা বুঝতে পারছিল তার দৃষ্টি ক্রমশ ঝাপসা হয়ে আসছে। কিছুটা খ্যাতি পাওয়ার কারণেই একদিন তামিল সিনেমায় অভিনয় করার সুযোগ পায় সে। আর এরপরই সে একেবারে সরাসরি পা রাখে বলিউডের মাটিতে। দ্যা হিরো, লাভ স্টরি অফ স্পাইন নামের সিনেমায় ডেবিউ করেছিল সে। এরপর আন্দাজ, মুচ্ছে সাদি কারোগির মতো বেশ কয়েকটি সিনেমায় অভিনয় করে সে। 

 

আরও পড়ুন: ৫০ পয়সায় সিনেমা বানিয়েছিলেন শিবপ্রসাদ !

 

সিনেমাগুলো হিট হলেও মেয়েটি নিজের পরিচিতি তৈরি করতে সফল হলো না। হঠাৎই তার কাছে অফার আসে এক অ্যাতরাজ (Aitraaz) সিনেমার একটি বিশেষ রোলের। তারা রোলটি ছিল খলনায়িকার। ক্যারিয়ার যখন ঠিক মত তৈরী হয়নি এই সময়ে এত বড় রিস্ক অন্য কেউ নিতো কিনা জানা নেই, তবে মেয়েটা সাহসে ভর করে এগিয়ে এল। আর সিনেমা রিলিজ হতেই সবাই ধন্য ধন্য করতে লাগলো তার অভিনয় দক্ষতাকে। কেউ কেউ তো এমনটা বলতে লাগল নায়ক-নায়িকা নয় বরং নেগেটিভ চরিত্রটা জন্য হিট হয়েছে এই সিনেমা। এরপর মেয়েটিকে থেমে থাকতে হয়নি মেয়েটা নাম প্রিয়াঙ্কা চোপড়া ( Priyanka Chopra)। কখনো সিনেমার দৃশ্য নাচ করতে গিয়ে কারেন্টের তারে পা রেখে আহত হয়েছেন। আবার কখনো অ্যাকশন দৃশ্য শ্যুট করতে গিয়ে গুরুতর চোট পেয়েছেন দেহে। সব বাধা-বিপত্তি অতিক্রম করে উপহার দিয়ে গেছেন ডন, বারফি, অগ্নিপথ, sky's পিংক এর মতো সিনেমা। একইসাথে মেরিকম এবং ফ্যাশনের মতো নায়িকা কেন্দ্রিক সিনেমাতেও দাপিয়ে বেড়িয়েছেন। নিজের অধ্যাবসায় জোরে তিনি জায়গা করে নিয়েছেন হলিউড সিনেমাতেও। 


তিনি কেবলমাত্র বলিউডের অন্যতম খ্যাতনামা নায়িকা নন বরং বহু মানুষের রোল মডেলও। তার তৈরি প্রিয়াঙ্কা চোপড়া ফাউন্ডেশন দরিদ্র মানুষের কাছে পৌঁছে দেয় স্বাস্থ্য ও শিক্ষার আলো। প্রিয়াঙ্কা চোপড়া বলেন আমি জানতাম আমি মুখে সোনার চামচ নিয়ে জন্মাই নি। এটাও জানতাম যে বলিউডে নেপোটিজম এর কতখানি বাড়বাড়ন্ত রয়েছে। নিজের সামনে শুধু একটাই গোল সেট করেছিলাম আমি আর তা হলো ভয় না পেয়ে এগিয়ে যাওয়া। ভালো থাকুন প্রিয়াঙ্কা চোপড়া আপনার আগামী সিনেমার জন্য অধীর আগ্রহে আমরা অপেক্ষা করছি।

Cradit-UltiMad Media youtube

আরও পড়ুন: ট্যাক্সি ড্রাইভার থেকে বলিউড খ্যাত অভিনেতা !

 

Post a Comment

নবীনতর পূর্বতন