বলা হয় বলিউডে নাকি তারাই অভিনয়ের সুযোগ পান যাদের মা বাবা আগে থেকেই ইন্ডাস্ট্রিতে রয়েছেন। হ্যাঁ নেপোটিজম, বারবার অভিযোগে কাঠগড়ায় দাঁড়িয়েছে বলিউড। আমরাও এমন বহু অযোগ্য অভিনেতাকে সিনেমায় অভিনয় করতে দেখেছি। যাদের নামের পাশে লেখা থাকে স্টার কিড। তবে এমনও কিছু অভিনেতা রয়েছেন যারা পরিশ্রমের জোরে জায়গা করে নিয়েছেন এই ইন্ডাস্ট্রিতে। কার্তিক আরিয়ান তাদের মধ্যে অন্যতম। কিন্তু সেই কার্তিক কে আবার সিনেমা থেকে বাদ দিলেন করান জহার। আরো একবার করন জোহারের বিরুদ্ধে উঠল নেপোটিজম এর অভিযোগ। কে এই কার্তিক আরিয়ান? চলুন শুনেনি তার লড়াইয়ের গল্পটা।
ছেলেটা জন্ম হয়েছিল গোয়ালিয়ারে 1990 সালে বাবা-মা দুজনেই ডাক্তার ছিলেন, অথচ ছেলেটা ছোট থেকেই স্বপ্ন দেখতো রুপোলি পর্দার নায়ক হয়ে ওঠার। কিন্তু বাবা মাকে সাহস করে এই ইচ্ছের কথা কোনদিনই মুখ ফুটে বলতে পারি নি সে। যে কজন বন্ধু কে বলেছিল তারা প্রত্যেকেই ছেলেটার এমন অদ্ভুত ইচ্ছের কথা শুনে হেসে উড়িয়ে দিয়েছিল। গোয়ালিয়ার এটি একটি ছোট স্কুল থেকে পড়াশোনা করে সে। সবার কাছে গল্প শোনাচ্ছিল অভিনেতা হতে গেলে নাকি মুম্বাই যেতে লাগে। ছেলেটা ঠিক করেছিল সেও যাবে কিন্তু বাবা মাকে না জানিয়ে যাবে কি করে? এই ভাবনায় জ্বালিয়ে মারছিল তাকে। হঠাৎই একটা বুদ্ধি খেলে যায় মাথায়। বি-টেক পড়াশোনার জন্য মুম্বাইয়ের একটি কলেজে ভর্তি হয় সে। ফলে মুম্বাই যাওয়ার একটা সুন্দর অজুহাত জুটে যায় তার। কলেজে প্রায় কোনদিনই দেখতে পাওয়া যেত না ছেলেটাকে।সে সারাদিন বিভিন্ন জায়গায় ঘুরে ঘুরে অডিশন দিয়ে বেড়াতো। কিন্তু এ কথা সবাই জানে যে মুম্বাইতে আসা সহজ এখানে লড়াই করে টিকে থাকার সহজ নয়। অ্যাক্টিং স্কুল গুলোর যা ফ্রি ছিল তা তার পক্ষে সেসময়ে দেওয়া সম্ভব ছিল না। সে মডেলিং করতে শুরু করে বেশ কিছু এড ফিল্মে কাজ করলেও সেগুলো রিলিজ হয় না।
আরও পড়ুন: মেদিনীপুরের সাধারন ছেলেটা আজ সারা বাংলার ক্রাশ !
ততদিনে বি-টেক এর পড়াশোনা শেষ হয়ে আসছিল, এই কোর্স শেষ হয়ে গেলে মুম্বাই থেকে যাবার মত আর কোন অজুহাত ছিল না তার কাছে। খরচ বাঁচানোর জন্য 12 জনের সাথে শেয়ারে একটা ছোট ভাড়া বাড়িতে থাকতে শুরু করে সে। হতাশা গ্রাস করে ফেলছিল ছেলেটাকে অভিনয়ের জন্য পড়াশোনা ছেড়ে এভাবে দিনের পর দিন পড়ে থাকার সিদ্ধান্ত নিয়ে সে কতটা ঠিক করেছে এ বিষয়ে নিজেকেই প্রশ্ন করতে শুরু করেছিল সে। কিন্তু তবুও হাল ছেড়ে যায়নি। এরইমধ্যে সে পেয়ার কা পঞ্চনামা নামের একটা সিনেমার অডিশনে যায়। কিন্তু এবারও রিজেক্ট হয়ে ফিরে আসে এর কিছুদিন বাদেই হঠাৎ একটা ফোন আসে তার কাছে ফোনটা এসেছিল পেয়ার কা পঞ্চনামা টিমে তরফ থেকেই। জানায় যে ছেলেটার অডিশনের ক্লিপটা আরো কয়েকবার দেখেছেন তারা আর তারা চান এই ছেলেটি যেন তাদের সিনেমার মুখ্য চরিত্রে অভিনয় করে।
আনন্দে আত্মহারা হয়ে গেছে ছেলেটা প্রথমেই মাকে ফোন করে সব খুলে বলে।মা খুঁশি হন নিঃসন্দেহে। এতক্ষণে আশা করি বুঝে গেছেন কার কথা বলছি, হ্যাঁ তরুণ অভিনেতা কার্তিক আরিয়ানের (Kartik Aaryan) কথাই বলছি আমরা। পেয়ার কা পঞ্চনামা রিলিজ হওয়ার পর এই সিনেমায় তার বলে একটি ডায়ালগ সোশ্যাল-মিডিয়ায়-ভাইরাল হয়ে যায়। এরপর আর পিছনে ফিরে তাকাতে হয়নি তাকে। পেয়ার কা পঞ্চনামা 2, সনু কে টিটু কে সুইটি, লুকা-ছুপির মতো একের পর এক সিনেমা আসতেই থেকেছে তার কাছে। বর্তমানে নিজের উপার্জিত টাকায় তিনি মুম্বাইতে কিনে ফেলেছেন একটা বাড়ি, যেখানে বাবা-মায়ের সাথে থাকেন তিনি। ভাল থাকুন কার্তিক আপনার এই সাফল্যের গল্পটা অনেকের কাছেই ইনস্পিরেশন। নেপোটিজমের ভয়ঙ্কর থাবা যেন কোনদিন আপনার ক্যারিয়ারের বাধা হয়ে না দাঁড়ায়।
Cradit-UltiMad Media youtube
আরও পড়ুন: M.A. পাশ মেয়ে কেন আজ Zomato ডেলিভারি গার্ল !
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন