বাংলাদেশের ময়মনসিংহের ভালুকা জেলায় জন্ম হয়েছে ছেলেটার 1982 সালে। বাবা ছিলেন সরকারি চাকুরিজীবি, মা গৃহিনী 4 জনের পরিবারের অভাব থাকলেও, বাবা-মা কোনদিন এই ছেলেটি সেটা বুঝতে দেননি। কিছুটা বড় হওয়ার পর ছেলেটা শখ হয় ঢাকায় এসে মিডিয়ায় কাজ করবে। কিন্তু বাড়ির লোক এতে রাজি ছিলেন না। অনেক বোঝা সত্বেও ছেলেটা নাছোড়বান্দা হয়ে রইল। অবশেষে একদিন বাড়ির অমতে, 257 টাকা নিয়ে ঢাকায় পালিয়ে আসে সে। নিজেদের জমানো টাকা দিয়ে তাকে সাহায্য করেছিল তারই দুই বন্ধু। ঢাকায় এসে বহুদিন ভীষণ পরিশ্রম করবার পর, একদিন হঠাৎ রেম্পে হাঁটার সুযোগ পেল ছেলেটা। কিন্তু সেখানে গিয়ে তার মনে হয়েছিল এতোজন স্টাইলিশ মডেল এর মাঝে হয়তো একেবারে হারিয়ে যাবে সে। এরপর মডেল হিসেবে বারবারই রেজেকশন এর মুখোমুখি হতে হয়েছে তাকে। তা সত্ত্বেও সে চেষ্টা করে যেত এসব খারাপ লাগা যেন তাকে গ্রাস না করে ফেলতে পারে।
রেম্প থেকে সোজা পা দেয় রেডিও স্টেশনে। রেডিও ফুর্তির শুভর শো নামে তার একটি নিজস্ব শো নিয়ে হাজির হলো সে। এই শো করেই মানুষজনের মাঝে বেশ খানিকটা জনপ্রিয়তা লাভ করল। তার এই শো মহিলা মহলে বিশেষ জনপ্রিয় হয়ে উঠল। 2007 সালে ছেলেটা মোস্তফা সরবার ফারুকীর 'হে-না' নাটক দিয়ে প্রথমবার ছোটপর্দায় পা রাখল। 'ইজ ইকুয়াল টু' নামের টিভি শোতে কাজ করলো 2008 সালে। এরপর লীলাবতী এবং সিরিয়াস একটা কথা আছে নামে টিভি সিরিজেও কাজ করেছে সে। 2010 এ জাগো ড্যেয়ার টু ড্রিম নামে সিনেমার মাধ্যমে ছেলেটা বড় পর্দায় নিজের অভিনয় জীবন শুরু করে। যদিও সিনেমায় চরিত্র তেমন গুরুত্বপূর্ণ কিছু ছিল না। ছেলেটার অভিনয় দেখে অনেকে প্রশংসা করেছিল। ছেলেটা ভেবেছিল এবার হয়তো তার ভাগ্য খুলে যাবে। কিন্তু এর পর বেশ কিছু সিনেমার অফার এলেও, শুরু হয়ে কিছুদিনের মধ্যে কাজ বন্ধ হয়ে যায় সেগুলোর। নানা ধরনের সমালোচনার মুখোমুখি হতে হয় তাকে।
এতদিন রিডিও জকি হিসেবে কাজ করার পরেও, তাকে শুনতে হয়েছিল তার কন্ঠস্বর নাকি এতটাই কর্কস যে নায়ক নয় বরং ভিলেনের চরিত্রে মানানসই হবে তার জন্য। এমনকি নায়ক হওয়ার পক্ষে তার উচ্চতা নাকি ও একটু বেশি বেমানান। 2013 সালে 'পূর্ণদৈর্ঘ্য প্রেমকাহিনী' ছেলেটাকে দেখতে পাওয়া গেল ভিলেনের রোলে আর এই সিনেমাটা শুধুমাত্র যে বাণিজ্যিকভাবে সফল হল তা নয় সমালোচকরাও ভূয়শী প্রশংসা করল ছেলেটার।
আরও পড়ুন-M.A. পাশ মেয়ে কেন আজ Zomato ডেলিভারি গার্ল !
এই সিনেমার জন্য ছেলেটা জিতে নিল মেরিল প্রথম আলো পুরস্কার। আর এরপর থেকে ছেলেটাকে একবারের জন্যও পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি। তার নাম আরিফিন শুভ(Arifin Shubho)। এফতাকার চৌধুরীর অ্যাকশন থ্রিলার অগ্নির জন্য বডিবিল্ডারদের মত চেহারা তৈরি করতে হয়েছিল তাকে। এই সিনেমাটি তুমুলভাবে জনপ্রিয় হয়। এরপর তার কাঁটা, ছুঁয়ে দিলে মন, ঢাকা অ্যাটাক, ধ্যাততেরিকি, একটি সিনেমার গল্প, আহা রে, সাপলুডু প্রভৃতি সিনেমায় তাকে দেখা যায়। কয়েকটি সিনেমায় তিনি সংগীতশিল্পী হিসেবে কাজ করেছেন। আরেফিন শুভ মনে করেন তিনি যা কিছু অর্জন করেছেন জীবনে তাতে তার নিজের থেকেও তার ফ্যানেদের ভূমিকা বেশি।
তিনি বলেন জীবনে এমন অনেক মুহূর্ত আসবে যখন মনে হবে সবকিছু নষ্ট করে ছেড়ে চলে যায়। আর মাথা উঁচু করে টিকে থাকার সাহস টা ঠিক তখনই করতে হবে মানুষকে। ভাল থাকুন আরিফিন শুভ এরকম অসাধারণ চরিত্রেই আমরা আপনাকে বারবার দেখতে চাই।
Cradit-UltiMad Media YouTube Sujoyneel
আরও পড়ুন-‘ফ্যামিলি ম্যান’-এ ‘রাজি’ সেজে কাঁপিয়ে দিয়েছেন দর্শক মহল !
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন