1969 সালের 2রা এপ্রিল দিল্লিতে, এক পাঞ্জাবী হিন্দু পরিবারে জন্ম হয়েছিল ছেলেটার। বাবা বলিউডের স্টান্ট কোরিওগ্রাফার ছিলেন। স্বাভাবিক ভাবেই ছোটবেলার বেশিরভাগ সময়ই বিভিন্ন অ্যাকশন সিনেমার সেটেই কেটে যেত ছেলেটার। বাবা মূলত গাড়ি নিয়ে বেশিরভাগ স্টান্ট করতেন। মাত্র নয় বছর বয়সী ছেলেকে গাড়ি চালানো শিখিয়ে দেন তিনি। অল্প বয়সেই স্টান্ড গুলো যেন তার কাছে জলভাত হয়ে গেছিল। কলেজে পড়তে ছেলেটা ক্লাসের বাইরে দিনের বেশিরভাগ সময় কাটিয়ে দিত। বন্ধুদের সাথে মিলে বাইকে চড়ে, কঠিন থেকে কঠিনতর স্টান্ট দেখিয়ে তাক লাগিয়ে দিত সবাইকে।
অভিনেতা হওয়ার ইচ্ছে তার কোনো দিনই ছিল না। তিনি চেয়েছিলেন ফিল্ম ডিরেকশন দিতে। দু-একটা কম বাজেটের সিনেমা এসিস্ট্যান্ট ডিরেক্টর হিসেবে কাজ করেছিলেন তিনি। যদিও সেগুলোর কোনটাই রিলিজ হয়নি পরবর্তীকালে। কিন্তু বাবা নিজের অভিনেতা হওয়ার স্বপ্ন পূরণ করতে পারেননি বলে বরাবরই পেয়েছিলেন ছেলে অভিনয় নামুক।
আরও পড়ুন-গানের স্কুলের শিক্ষিকা থেকে জাতীয় পুরস্কার পাওয়া অভিনেত্রী!
সেসময় ফিল্ম ডিরেক্টর কুকু কোহেলি তার আগামী ফিল্মের জন্য নায়ক খুঁজছিলেন। কোন কারণে একদিন ছেলেটার বাবার অফিসে এসেছিলেন তিনি। এখানেই এই ছেলেটার এক কপি ছবি হাতে আসে তার। আর একবার দেখেই তিনি সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেন তার পরের ছবিতে ছেলেটিকেই তিনি নায়কের রোলে কাস্ট করতে চান। অবশেষে 1991 সালে 'ফুল অর কাটে' সিনেমার মাধ্যমে ছেলেটা বলিউড ইন্ডাস্ট্রিতে পা রাখে। তার বয়স তখন মাত্র 18 বছর। এই সিনেমার ওপেনিং সিনে দেখতে পাওয়া যায় ছেলেটি দুটো চলন্ত বাইক এর মাঝখানে ব্যালেন্স করে দাঁড়িয়ে রয়েছে। সিনটা মারাত্মক রকম জনপ্রিয় হয়েছিল।
আর প্রথম সিনেমার জন্যই ফিল্মফেয়ার এওয়ার্ড ফর দ্যা বেস্ট মেল ডেবিউ জিতে নেয় ছেলেটা । এই একটা সিনেমার জন্য ছেলেটা রাতারাতি স্টার হয়ে যায়। প্রথম দিকে একটানে অ্যাকশন সিনেমায় অভিনয় করেছিল। যার মধ্যে রয়েছে জিগর, দিবিয়া শক্তি, সংগ্রাম, দিলওয়ালে, কানুন, সোহাগ প্রভৃতি। তবে অ্যাকশন হিরো হিসেবে পরিচিত হয়ে ওঠাই বলিউড নায়ক, 1999 সালে হাম দিল দে চুকে সানাম সিনেমার রোমান্টিক চরিত্রে অভিনয় করে অবাক করে দিয়েছিল সব্বাইকে। 2006 সালে বিশাল ভরদ্বাজ উইলিয়াম শেক্সপিয়ারের ওথেলো নোভেল অবলম্বনে ওমকারা সিনেমাটি তৈরি করলে সেখানে ছেলেটিকে মুখ্য চরিত্রে অভিনয় করতে দেখা যায়।এই একই বছর প্রকাশ পায় রহিত শ্যেট্টির গোলমাল, এই সিনেমাটি কে সুপারহিট সিনেমা বলে ঘোষিত করা হয়। আর গোলমালের কারণেই, এই অ্যাকশন হিরো নাম পাকাপাকি ভাবে ভেঙে দিয়ে জয় করলেন অজয় দেবগান জয় করলেন কমেডি হিরোর শিরোপা। পরবর্তীকালে একদিকে যেমন ওয়ান্স আপন এ টাইম ইন মুম্বাইয়ে দুর্ধর্ষ গ্যাংস্টারের ভূমিকায় দেখতে পাওয়া গেছে তাকে।
তেমনই সিঙ্গাম এ দেখা গেছে নির্ভীক পুলিশ অফিসারের রোলে। আবার সেই অজয় দেবগন বোল বচ্চন সিনেমায় হাসিয়েছেন হলভর্তি দর্শকদের। দুটি ন্যাশনাল অ্যাওয়ার্ড ছাড়াও 2016 সালে পদ্মশ্রী দ্বারা সম্মানিত করা হয়েছে। এবছর কভিদ-19 এ আক্রান্ত মানুষদের সাহায্যার্থে কুড়ি বেডের এক ICU তৈরি করার জন্য তিনি এক কোটি টাকা দান করেছেন বলে জানা গেছে। ভালো থাকুন অজয় দেবগন এভাবেই জয় করে নিন আরো অনেক মানুষের মন।
Cradit-UltiMad Media YouTube/ Sujoyneel
আরও পড়ুন-মেদিনীপুরের সাধারন ছেলেটা আজ সারা বাংলার ক্রাশ !
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন