সনু সুদ ফাউন্ডেশন, বর্তমানে এই নামটার সাথে আমরা সবাই কমবেশি পরিচিত। লক্ষ লক্ষ ভারতীয় পাশে যিনি এসে, সৃষ্টিকর্তার দূত হিসেবে দাঁড়িয়েছেন তিনি সনু সুদ। আর সনু সুদ ফাউন্ডেশনে টাকা দান করে রাতারাতি সনুসুদের চোখে হিরো হয়ে উঠেছেন এই অভিনেত্রী। চলুন আজ শোনা যাক তার গল্পটাই।
সারার দাদু ছিল বিখ্যাত ক্রিকেট প্লেয়ার, ঠাকুরমা একসময়ের জনপ্রিয় অভিনেত্রী। এমনকি বাবা-মা দুজনেই ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রির বড় দুটো নাম। কিন্তু তবুও মেয়েটিকে ট্রোলড হতে হয়েছিল সোশ্যাল মিডিয়ায়। কেন? আমাদের সমাজে এখনও মানুষ মানুষের গুণ দিয়ে নয়। চেহারা দিয়ে বিচার করে তার সম্বন্ধে। আগে হ্যাঁ, স্টার কিড হয়েও দেহের অতিরিক্ত মেদের কারণে গুরুতর রকম অপমানের মুখে পড়তে হয়েছিল তাকে। মেয়েটির নাম সারা আলি খান, বাবা জনপ্রিয় বলিউড অভিনেতা সাইফ আলি খান। মা অমৃতা সিং, ঠাকুরমা শর্মিলা ঠাকুর একসময়ে দাপটের সাথে অভিনয় করেছেন বাংলা ও হিন্দি সিনেমায়।
এমন বিখ্যাত পরিবারের মেয়ে হওয়ার দরুন সিনেমায় আসার বহু আগেই লাইমলাইটে এসেছিলেন সারা। সারার জন্ম হয় মুম্বাইতে, 1995 সালের 12 ই অগাস্ট, ছোট থেকে অভিনয় ভিসন শখ ছিল তার।মাত্র 9 বছর বয়েসে বলিউড অভিনেত্রী ঐশ্বর্য রায় কে দেখে তিনি ঠিক করে নিয়েছিলেন বড় হয়ে ঐশ্বর্যের মতোই অভিনেত্রী হবেন। বাবাকে ছোট থেকেই ভীষণ ভালোবাসতেন সারা। বাবা সাইফ ও চোখে হারাতে মেয়েকে। কিন্তু সারার বয়স যখন কেবলমাত্র 9 কিংবা 10 সেফ এর ডিভোর্স হয়ে যায় অমৃতার সঙ্গে। তখন থেকে সারা এবং তার ছোট ভাই ইব্রাহিম এর সম্পূর্ণ দায়িত্ব অমৃতাকে তুলে নেন। সে সময় সারার সাথে দেখা করার অনুমতি ছিল না সেফের এর কাছে। কষ্ট হলেও ছোট্ট সারার কাছে সেই সময়ে ঘটনার গাম্ভীর্য বোঝার মত ক্ষমতা ছিল না।
আরও পড়ুন:বাংলাদেশের সেলসম্যান থেকে বলিউডের সুপারস্টার!
অভিনয় প্রতি সারার ঝোঁক থাকলেও অমৃতা চেয়েছিলেন অভিনয় জগতে পা রাখবা আগে সারা যেন পড়াশোনায় মন দেন। সারা ছোট থেকেই একজন মেধাবী ছাত্রী ছিলেন। মুম্বাই থেকে স্কুলের পাট মিটিয়ে সারা চলে জান নিউইয়র্ক।.
সেখানকার একটি কলেজ থেকে লাভ করেন গ্রাজুয়েশনের ডিগ্রি। এই সময় তার ওজন অস্বাভাবিক ভাবে বেড়ে দাঁড়ায় 96KG। PCOS Disorder ছিল তার যার ফলে নানান শারীরিক ও মানসিক সমস্যার মুখোমুখি হতে হতো তাকে। এই ডিসঅর্ডার এর জন্যই, ওজন কমানো খুব একটা সহজ ছিল না তাঁর পক্ষে। আর এই সময়ে কিছু ছবি ভাইরাল হয়ে যায় সোশ্যাল মিডিয়ায়।আর তা থেকেই শুরু হয় ট্রোলিং।
সারা গ্রাজুয়েশনের সময়েই অ্যাক্টিং ক্লাস জয়েন করেছিলেন। গ্রাজুয়েশন শেষ করে অভিনয় জগতে পা রাখতে চাইছিলেন। তিনি সিদ্ধান্ত নেন যেমন করেই হোক ওজন কমিয়ে ছাড়বেন তিনি। টানা 18 মাস অক্লান্ত দৈহিক পরিশ্রম করেন সারা। খাদ্যাভাস আমূল বদলে ফেলেন। বাড়ি ফেরার আগে টানা চার মাস সারা নিজের মাকে ভিডিও কল করেন নি। তিনি চেয়েছিলেন সম্পূর্ণরূপে ট্রান্সফরম হয়ে তবেই মায়ের সামনে এসে দাঁড়াতে। এয়ারপোর্টে অমৃতা যখন সারাকে পিক আপ করতে গিয়েছিলেন। কিছুক্ষণের জন্য তিনি চিনতেই পারিনি মেয়েকে।
2018 সালে কেদারনাথ সিনেমা দিয়ে বলিউডে ডেবিউ করেন সারা। আর অল্প পারেই রিলিজ হয় তার দ্বিতীয় সিনেমা সিম্বা। দুটি সিনেমাতেই সারার অভিনয় দর্শকদের কাছে খুবই প্রশংসা পায়। শুধু অভিনেত্রী হিসেবে নয়, মানুষ হিসেবেও সারাকে পছন্দ করেন অনেকেই। স্টার হওয়া সত্ত্বেও খুব সাধারণ জীবন যাপন পছন্দ করেন সারা।ভালো থাকুন সারা আলি খান।
Cradit-UltiMad Media YouTube/ Sujoyneel
আরও পড়ুন:সাদিও মানের, এক ফুটবলারের হৃদয় ছুঁয়ে যাওয়ার গল্প !
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন