বারিভেলমপালয়ম চেন্নাইয়ের একটি ছোট্ট গ্রাম। এই ছোট্ট গ্রামের আরো ছোট একটি ভাঙাচোরা দোকানে ইডলি বানানে অশীতিপর বৃদ্ধ। আর এই প্রতিটি ইটলি তিনি বিক্রি করেন মাত্র 1 টাকায়। কি চমকে গেলেন তো? কারন আজকের দিনে দাঁড়িয়ে মাত্র 1 টাকায় খাবার বিক্রি করা কি করে সম্ভব।
তাহলে জানিয়ে রাখি আজ যার গল্প বলতে চলেছি আমরা তার নাম কে কামেলাথান(K. Kamalathal)। লোকে যাকে চেনে ইটলি আম্মা নামে।নিজের বয়সের হিসেবে তিনি নিজে না জানলেও তাকে দেখে তা ভালই আন্দাজ করা যায়। অল্প বয়সে যখনই খাবারের দোকান টি তৈরি করেন তিনি তখন থেকেই ইটলির দাম তিনি এক টাকায় রেখেছিলেন। তার তৈরি ইটলি খেতে সুস্বাদু আর নরম তাই নয় এর সঙ্গে যে চাটনি এবং সম্বার দেন ইটলি আম্মা তার কোনো দামই নেন না তিনি। তার দোকান খুলে যায় ভোরবেলা। রাতের অন্ধকার পুরোপুরি কেটে যাবার আগেই রান্নার কাজে হাত দেন ইটলি আম্মা।
তাছাড়া যতটা সম্ভব পরিচ্ছন্ন রাখা যায় সেদিকে খেয়াল রাখেন তিনি। কাজে যাওয়ার পথে অসংখ্য মানুষ তার দোকানে ইডলি খেতে আসে। ইডলি আম্মাকে যখন জিজ্ঞেস করা হয় এই মূল্যবৃদ্ধির বাজারে দাঁড়িয়েও কেন ইডলির দাম বাড়াচ্ছেন না তিনি?আম্মা হেসে বলেন, খেটে খাওয়া মানুষেরা যাতে পেট ভরে খেতে পায়, তার চেষ্টাই করি আমি। আমি হঠাৎ দাম বাড়িয়ে দিলে অসুবিধায় পড়ে যাবে তারা। নিজের লাভ নিয়ে আমার কিছুই যায় আসে না। অনেক বোঝানো সত্ত্বেও নিজের এই সিদ্ধান্তে অটল থাকলেন তিনি।
আরও পড়ুন:মিয়া খলিফার লাইফস্টাইল , বয়স, আয়, স্বামী, বাড়ি, শিক্ষা, গাড়ি এবং বহু অজানা তথ্য !
কোরণা আবহের জন্য যখন হঠাৎ করেই সারাদেশে লকডাউন ঘোষণা হয়ে যায়। আরও বহু সাধারণ মানুষের মতো সমস্যায় পড়ে যান ইডলি আম্মাও। বহু দোকানি পাকাপাকিভাবে তাদের ঝাফ ফেলতে বাধ্য হয়। কিন্তু এক্ষেত্রে অনড় থাকেন এই একা ইড্লি আম্মাই। লকডাউন কিছুটা হালকা হলে, বেঁচে থাকা পুঁজি নিয়ে আবারও চালু করেন তার ইড্লির দোকান। আর সবাইকে অবাক করে দিয়ে এখনও ইডলির দাম একই রেখে দেন তিনি।
ইডলি আম্মার এই গল্প হঠাৎ করেই ভাইরাল হয়ে যায় নেটদুনিয়ায়। সাধারণ মানুষেরা তাকে ধন্য ধন্য করতে থাকেন। আর তারই গল্প সোশ্যাল মিডিয়ায় পড়েই এগিয়ে আসেন বিখ্যাত ব্যবসায়ী মাহিন্দ্রা গ্রপ অফ কম্পানিজ এর কর্ণধার স্বয়ং আনন্দ মাহিন্দ্রা(Anand Mahindra)। তিনি ইডলি আমার পাশে দাঁড়ানোর আশ্বাস দেন। তবে আশ্বাস দিয়ে কিন্তু থেমে থাকেননি তিনি আমাকে উপহার দিয়েছেন একেবারে নতুন ঝকঝকে এলপিজি ওভেন। তিনি জানান আর কখনো কাঠ পুড়িয়ে রান্না করতে হবে না আম্মাকে। এই ওভেনের সাহায্যে অনেক কম সময়ে তৈরি হয়ে যায় ইডলি। আনন্দ মাহিন্দ্রা সশরীরে এসে ইডলি আমার দোকানটির ঘুরে যান। আম্মা তাকে জানিয়েছিলেন যে রান্নার ব্যবস্থা মোটামুটি সামলানো গেলেও যে বাড়িতে আম্মা থাকেন সেটা ভেঙে পড়তে পারে যেকোনো দিন। তিনি জিজ্ঞেস করেন আনন্দের কোনো বিহিত করতে পারবেন কিনা। আম্মার ইচ্ছাও খুশিমনে পূরণ করেন আনন্দ মাহিন্দ্রা। বছর ঘুরতেই আম্মা পেয়ে জান একটা ঝাঁ-চকচকে বাড়ি। আবারো তিনি লেগে পড়েন কাজে।
তবে তার তৈরি ইডলির দাম কিন্তু একই থেকে যায় এখনো। ভালো থাকুন ইটলি আম্মা এক টাকার ইডলি পৌঁছে যাক প্রত্যেকটা খেটে খাওয়া মানুষের কাছে।
Cradit-UltiMad Media YouTube/ Sujoyneel
আরও পড়ুন:মহেশ বাবু, আসল পরিচয় কি জানা আছে ?
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন