কসময় সেলস টার্গেট পূরণ করার জন্য ঢাকা শহরের প্রান্ত থেকে প্রান্ত ছুটে বেড়াতে ছেলেটা। ঢাকা শহরে আসার আগে অবশ্য সে ছিল কলকাতায় পিওনের কাজ করত সেখানে। সেখান থেকেই এক বন্ধুর সূত্রে চলে আসে ঢাকাতে। হ্যাঁ বলিউডের অন্যতম সুপারস্টার এক সময় কাটিয়েছেন বাংলাদেশের ঢাকা শহরে সেলসম্যান হিসেবে। কে সুপারস্টার জানতে হলে পুরো গল্পটা শুনতে হবে।

1967 সালের 9 সেপ্টেম্বর এক মধ্যবিত্ত পাঞ্জাবি পরিবারে জন্ম নেয় এক ফুটফুটে পুত্রসন্তান। ছোট থেকেই  মার্শাল আর্ট এবং কেরাটের প্রতি ছেলেটার দারুন ভালোবাসা থাকলেও, আর পাঁচটা সাধারণ মধ্যবিত্ত পরিবারের মতোই পড়াশোনা থেকে বেশি মনোনিবেশ করানো হয় ছেলেকে।ঝামলা বাধে যখন সে কলেজে ভর্তি হয়। হঠাৎ একদিন ছেলে কলেজ থেকে ফিরে জানায় সে ব্যাংকক যেতে চায়।

 

শিখতে চায় মার্শাল আর্ট। কিছুতেই রাজি হয় না বাবা। শেষে সামান্য কিছু টাকা হাতে নিয়ে। ছেলে পাড়ি দেয় ভিনদেশে। সেখানে গিয়ে রোজগারের জন্য প্রথমে ট্যাক্সি ড্রাইভার, তারপর ওয়েটার হিসেবে চাকরি নেয় রেস্তোরাঁয়। পাশাপাশি চলতে থাকে মার্শাল আর্টের শিক্ষা। এরপর তাইকোন্ডোতে ব্ল্যাকবেল্ট খেতাব অর্জন করে ছেলে দেশে ফেরে। তবে বিশেষ সুবিধা হয় না তাতে। রোজগারের জন্য আবার বেরিয়ে পড়তে হয় পথে। প্রথমে কলকাতায় পিয়নের চাকরি, তারপর ঢাকা শহরে সেলসম্যানের কাজ, তারপর দিল্লিতে জুয়েলের ট্রেডিং এর কাজ করে অবশেষে মুম্বাইতে পা রাখেন ছেলে। না হিরো হতে নয় এক প্রতিষ্ঠানে মার্শাল আর্টসের এর শিক্ষক হিসেবে। আ এখান থেকেই ভাগ্যের চাকা ঘুরে যায় ছেলের।

আরও পড়ুন:জাদেজার প্রতি দিন রোজগার দশ টাকা ?

দেখতে-শুনতে ভালো, ছিপছিপে চেহারা। এই দেখে তার ছাত্ররা তাকে উপদেশ দিল একবার ফটোশুট করানোর জন্য। কিন্তু তা করানো টাকা কোথায়। তাই টানা দেড় বছর ফটোগ্রাফারের কাছে বিনে পয়সায় কাজ করলো ছেলে। অবশেষে হলো ফটোশুট।আর ওই ফটোশুটে ঘুরিয়ে দিল ছেলেটার জীবনের মোড়। মডেলিং করার ডাক পেলো সে।

 

মাত্র দুদিন কাজ করে। ছেলে যে টাকা আয় করল। তা সে সারা মাস খেটেও জমাতে পারত না। তাই শুরু হলো নতুন লড়াই। একটার পর একটা স্টুডিও ঘুরে বেড়াতে বেড়াতে অবশেষে ভাগ্যে জুটল প্রথম সিনেমার অফার। ব্যস, ওই শুরু হলো এক রূপকথা খিলাড়ি, মোহরা, ম্যা খিলাড়ি তু আনাড়ির মতো ব্লকবাস্টার সিনেমা করে এক্শন স্টার হিসেবে বলিউডে পাকাপাকিভাবে জায়গা করে নিলো। এরপর ধীরে ধীরে হেরাফেরি, ফির হেরাফেরি মত সিনেমায় কমিক রোলে অভিনয় করে সে আরো ভাঙলো নিজেকে।


টানা 28 বছর ধরে বলিউডের রাজ করার পরে আজ সেই ছেলের দখলে রয়েছে জাতীয় পুরস্কার পদ্মশ্রীর মত সর্বোচ্চ সম্মান। ঢাকার শহরে সেলসম্যানের  কাজ করে ঘুরে বেড়ানো সেই ছেলের নাম আজ ফোর্বস্ ম্যাগাজিনের সবচেয়ে ধনী অভিনেতা দের তালিকা জ্বলজ্বল করে। অক্ষয় কুমার, হ্যাঁ এই নামেই গোটা পৃথিবীর মানুষ তাকে চেনে। তার পিছনে কোন সেলিব্রেটি বাবা ছিলো না ছিলো.

 

না ছিল মাথার উপর সুপারস্টার আশীর্বাদ। সম্পূর্ণ নিজের পরিশ্রমে, সৎ পথে থেকে আজ তিনি এই উচ্চতায় পৌঁছেছেন। ভালো থাকবেন অক্ষয় কুমার(Akshay Kumar)।

Cradit-UltiMad Media YouTube/ Sujoyneel

আরও পড়ুন:মহেশ বাবু,‌ আসল পরিচয় কি জানা আছে ?


 

Post a Comment

নবীনতর পূর্বতন