আচ্ছা ধরুন প্রতিমাসে আপনার আয়ের 10 লক্ষ টাকার কাছাকাছি। তাহলে সেই টাকা দিয়ে আপনি কি করতেন। নিশ্চয়ই ভালো ভালো খাবার খেতেন। যেখানে ইচ্ছে ঘুরতে যেতেন। যা যা কেনার ইচ্ছে সে গুলো সব একেবারে কিনে ফেলতেন, তাইতো। সাদিও মানে, 28 বছর বয়সী সাদিও মানে (Sadio Mane) সেনেগালের একজন ফুটবলার। যিনি উইঙ্গের হিসেবে লিভার পুল এবং সেনিগাল ন্যাশনাল টিমের জন্য খেলেন। শুধুমাত্র খেলার জন্যই নয়। মানুষের সাথে আন্তরিক ব্যবহারের জন্য তিনি তার ফ্যানেদের কাছে বিশেষভাবে জনপ্রিয়। বিভিন্ন সময়ে তাকে দেখা গেছে, তার টিমের বাস থেকে জিনিসপত্র নামানোর কাজে সাহায্য করতে। কখনো বা ফ্যান আর বলবয়দের জন্য আচমকা উপহার নিয়ে এসে তাদের চমকে দিয়েছেন তিনি।
তবে 2019 সালের একটা বিশেষ ঘটনা একেবারে হতবাক করে দেয় সমস্ত ফুটবল ফ্যান সহ গোটা বিশ্বকে। 2019 সাল একটি ফটো ভাইরাল হয়ে যায়, সেখানে দেখতে পাওয়া যায়.
আরও পড়ুন:পৃথিবীর বাইরে থাকতে চান , এলন মাস্ক আছে তো !
সেখানে দেখতে পাওয়া যায় কোথাও থেকে ম্যাচ সেরে সাদিও মানে ফিরছিলেন। ফোটতে ধরা পড়ে তার হাতের আইফোনটি। দেখে বোঝা যাচ্ছে, হয়তো বা হাত থেকে কোন ভাবে পড়ে যাবার কারণে ফোনে স্ক্রিনটা ফেটে গেছে খুব বাজেরকম ভাবে। ফটোটা আপলোড পরেই ফ্যানেদের তরফ থেকে আসতে থাকে একের পর এক প্রশ্নের তীর। কেউ কেউ এই ঘটনা নিয়ে ঠাট্টা করবার সুযোগ হাতছাড়া করে না। এত বিপুল সম্পত্তির মালিক সাদিও। তিনি চাইলে একটা নতুন আইফোন কিনে নিতে পারেন। তিনি যদি তা নাও করতে চান নিদেনপক্ষে এই ফোনটা স্ক্রিন গার্ড টুকুওতো বদলে ফেলতে পারেন অনায়াসে। তাহলে তার মতন একজন সেলিব্রিটি এরকম ভাঙা ফোন নিয়ে কেন ঘুরে বেড়াচ্ছেন। কেনইবা তার ভাঙা ফোন সহ ছবি সোশ্যাল মিডিয়াতে ঘুরে বেড়াচ্ছে। এই একি প্রশ্ন যখন সাদিও মানে কে একটা ইন্টারভিউ তে জিজ্ঞেস করা হয় তিনি হেসে বলেন। আমি চাইলেই 10টি ফেরারি, 20 টি হিরে বসানো ঘড়ি বা দুখানা জেট প্লেন কিনে ফেলতে পারি। কিন্তু তাতে এই পৃথিবীর কোনো লাভ হবে কিনা বলতে পারেন? আমার জীবনে এমন একটা সময় ছিল যখন আমি না খেয়ে দিন কাটিয়েছি, মাঠে কাজ করেছি।
ফুটবল খেলেছি খালি পায়ে। ছোটবেলায় কোনদিন স্কুল যাবার সুযোগ পর্যন্ত পাইনি আমি। কিন্তু এখন আমার সামর্থ্য আছে। আমি চাইলে নিজের ইচ্ছে পূরণ করতে পারি। আর তাই আমি মানুষকে সাহায্য করি। আমি স্কুল বানিয়েছি, স্টেডিয়াম বানিয়েছি। ব্যবস্থা করেছি যাতে গরীব মানুষ ভরপেট খেতে পায়। প্রতিমাসে সেনেগালের দরিদ্র পরিবারগুলো জন্য নিজের উপার্জন থেকে 70 ইউরো দান করি আমি। আমার দামি গাড়ি কিংবা বিলাসবহুল বাড়ির দরকার নেই। আমি শুধু চাই জীবন আমায় যতটা দিয়েছে তার থেকে কিছুটা যেন আমি আমার নিজের মানুষদের দিয়ে যেতে পারি।
2019 সালে সাদিও মানিকে আফ্রিকার 2019 প্লেয়ার অফ দ্যা ইয়ার শিরোপা দেওয়া হয়। 2002 সালের পর তিনি প্রথম সেনেগাল বাসি ফুটবলার। যাকে এই সম্মানে ভূষিত করা হয়েছে। তার বার্ষিক আয় 14 মিলিয়ন ডলারের কিছু বেশি। যা দিয়ে চাইলে তিনি প্রতি সপ্তাহের 150 টা নতুন করে ফোন কিনতে পারেন।
কিন্তু এত প্রাচুর্য এত সম্পদ কোনকিছুই জীবনের প্রতি সাদিও মানের দৃষ্টিভঙ্গিকে বদলাতে পারিনি। শোনা যায় লিভারপুলের সাথে লেস্টারের কোন এক ম্যাচের শেষে তাকে স্থানীয় মসজিদের শৌচালয় পরিষ্কার করতেও দেখা গিয়েছে। ভালো থাকুন সাদিও মানে আপনার মত মানুষেরা ফুটবলের ম্যাচ কেন জীবন যুদ্ধে এইভাবে বিজয়ী হতে থাকুক।
Cradit-UltiMad Media YouTube/ Sujoyneel
আরও পড়ুন:মহেশ বাবু, আসল পরিচয় কি জানা আছে ?
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন