বাবা ছিলেন বিখ্যাত দক্ষিণ ভারতীয় অভিনেতা। কিন্তু বাড়ি থেকে কঠোর বারণ ছিল। অপ্রয়োজনে যেন বাবার নাম কোথাও ব্যবহার করা না হয়। আসলে সোনার চামচ মুখে নিয়ে জন্মালেও তার সন্তান জীবনের আসল মূল্যবোধগুলো যেন বুঝতে পারে। তাই স্টারের ঘরে জন্ম নিলেও ছোট থেকেই তাকে বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছিল। যদি সাফল্য পেতে চাও তাহলে খাটো। খেটে জায়গা করে নাও পৃথিবীর বুকে। আর তাই হয়তো দক্ষিণ ভারতের একজন মেগাস্টার হওয়া সত্ত্বেও তিনি এতটা সাধারণ। তিনি এতটাই ডিসিপ্লিন্ট। চলুন শুনে নেওয়া যাক তার কথা।


সাল 1998 এক তরুণ সমান ঘুরে বেড়াচ্ছেন একটার পর একটা অডিশনে। কেউ বলছে পরে ডাকবে, কেউবা বলছে ছেলেটা তখনও হিরো চরিত্রে অভিনয় করার মত অতটা ম্যাচিওর দেখতে নয়। কিন্তু তার পরেই যখন তারা জানতে পারছি এই ছেলেটা আসলে বিখ্যাত অভিনেতা সিভারামাকৃষ্ণন ছেলে তারা ঝাঁপিয়ে পড়ছে তাকে সিনেমায় নেওয়ার জন্য। কিন্তু ছেলেটাও নাছোড়,‌‌বাবার নামে নয় যে অডিশনে নিজের যোগ্যতায় পাস করবে। সেই সিনেমাতেই কাজ করবে সে। আর তাই হয়তো আজকের দিনে নেপোটিজম নেপোটিজম নিয়ে এত কথা হওয়া সত্ত্বেও কেউ একবারও এই ছেলেটার নাম উচ্চারণ করতে পারেনা। কারণ সবাই জানে এই ছেলেটা স্টার হয়েছে সম্পূর্ণ নিজের যোগ্যতায়। 

আরও পড়ুন:এক হাতে ২০০০ শিশুর হার্ট অপারেশন কারা গায়িকা !

অবশেষে 1999 সাল পাশ করেন তিনি। সুযোগ আসে প্রিটি জিন্টার সাথে একসাথে কাজ করার। রাজাকুমারুড়ু সিনেমা দিয়েই দক্ষিণি সিনেমা জগতে পদার্পণ করেন তিনি। সেই যে শুরু তারপর থেকে আর কোনো দিনই পিছন ফিরে তাকাতে হয়নি তাকে। একের পর এক সাফল্য একের পর এক অ্যাওয়ার্ড। স্বীকৃতি এবং পরিস্থিতি বাড়তে থাকে সময়ের সাথে সাথে। আর আজ তাই দীর্ঘ কুড়ি বছর পরে দক্ষিণের সিনেমায় সর্বাধিক সুপার হিট সিনেমার নায়ক তিনি। রজনীকান্তের পর হায়েস্ট পেড অভিনেতা যদি কেউ থেকে থাকে তা তিনি।


তার সম্পত্তির পরিমাণ‌ 30 মিলিয়ন ডলারের কাছাকাছি তিনি আর কেউ না সাউথ ইন্ডিয়ান সিনেমার অন্যতম পরিচিত ব্যক্তিত্ব মাহেশ বাবু(Mahesh Babu)। কিন্তু এত কেন সাফল্যের কথা। এবার আসি মানবিকতার দিকে। এই ভদ্রলোক নিজের সম্পূর্ণ আয় প্রায় 30%, হ্যাঁ ঠিকই বলছি, প্রায় 30% দান করে দিয়েছেন দুস্থ এবং দরিদ্র শিশুদের চিকিৎসার স্বার্থে প্রচারের আড়ালে থেকেই নিজের স্ত্রীর সাথে একসাথে মিলে করে গেছেন অগাধ জনসেবা। একাধিক এনজিও থাকা দুস্থদের স্বার্থে ব্যয় করেছেন বিপুল অর্থ। Heal-a-Child নামক এক এনজিওর সাথে মিলে গত 10 বছরে চিকিৎসা করিয়েছেন প্রায় এক লক্ষ হৃদরোগে আক্রান্ত শিশুর। এমনকি নিজের পিতার জন্মস্থান যে গ্রামটি সেই গ্রামের উন্নয়নের সামগ্রিক ভার তুলে নিয়েছেন নিজের হাতে। গড়ে তুলেছেন গরীব শিশুদের জন্য স্কুল এবং হাসপাতাল। 


1 লক্ষ শিশুর চিকিৎসা সংখ্যাটা কি অবিশ্বাস্য না। হ্যাঁ হয়তো আমাদের কাছে সত্যিই অবিশ্বাস্য তবে যে মানুষটা জীবনের প্রতিটা পদে নিজের মানবিক কর্তব্যগুলো কে বুঝতে শিখেছে তার কাছে গরীব এবং দুস্থ মানুষের জীবনের থেকে অধিক মূল্যবান এই পৃথিবীতে আর কিছু হবেনা এটাই খুব স্বাভাবিক নয় কি। যে মানুষটাকে জন্মের পর থেকেই তার মা-বাবা আঙুল ধরে শিখিয়ে দিয়েছেন জীবনের আক্ষরিক মূল্যবোধের অর্থ। সে তো এমন হবেই। ভালো থাকুন মাহেশ বাবু আপনার এই মহানুভবতা ছড়িয়ে পড়ুক সারা বিশ্বের প্রতিটা মানুষের ভিতর।

Cradit-UltiMad Media youtube/Sujoyneel

আরও পড়ুন:পৃথিবীর বাইরে থাকতে চান , এলন মাস্ক আছে তো !

 

Post a Comment

নবীনতর পূর্বতন