আচ্ছা আপনারা কি কখনো চাঁদে বা মঙ্গলে যাওয়ার স্বপ্ন দেখেছেন? অবশ্যই আমরা হয়তো কখনো না কখনো মনের ভুলেও এমন স্বপ্ন দেখে ফেলি। আজ আমরা যাকে নিয়ে গল্প করতে চলেছি সেই ভদ্রলোক সিদ্ধান্ত নিয়েছেন যে 2060 সালের মধ্যে তিনি পৃথিবী থেকে মঙ্গলে যাওয়ার খরচ কে আমেরিকা একটা বাড়ি কেনার সমান খরচে নামিয়ে আনবে। অবিশ্বাস্য তাই না, চলুন আজ সেই গল্পটা শুনে নেওয়া যাক।
ছেলেটা জন্ম হয়েছিল সাউথ আফ্রিকায় 1971 সালে। সারাদিন বই ভিডিও গেম আর ইলেকট্রনিক গ্যাজেট নিয়ে এতটাই মগ্ন থাকত সে। যে বাড়ির লোকজনের কোনো কথা তার কানেই যেতনা।প্রাথমিকভাবে ডাক্তাররা তো এমনটাই সন্দেহ করেছিল যে ছেলেটা হয়তো আদও কানে শুনতে পায় না। তবে এই সময়টা ছিল তার জীবনের সবথেকে সুন্দর সময়। এর পরেই হঠাৎ বাবা-মায়ের বিচ্ছেদ হয়ে যায়। সারাদিন একা একা থাকতে হতো ছেলেটাকে। স্কুল থেকে হামেশাই মার খেয়ে বাড়ি ফিরতো সে। এই পরিস্থিতিতে সে বন্ধু বানিয়ে ফেলল পড়ার বই এবং ইলেকট্রনিক গ্যাজেটদের।
ঝোঁক বাড়তে লাগল কম্পিউটারের প্রতি। মাত্র 12 বছর বয়সে প্রোগ্রামিং শিখে সে তৈরি করে ফেললো একটি ইন্টারনেট গম, বয়স তখন 17। সে চলে এলো ক্যানাডায়। সেখানে পড়াশোনা করে বছর তিনেক পর সোজা আমেরিকায়। সেখান থেকে ফিজিক্সের গ্রাজুয়েশন কমপ্লিট করে চলে গেল লন্ডনে। PHD শুরু করেও ছেড়ে দিলো মাঝরাস্তায়। 1995 সালে স্থাপিত হলো তার প্রথম কোম্পানি Zip-2।
এখান থেকেই যা টাকা এল তা দিয়ে তৈরি করল x.com বলে ওয়েবসাইট। যেখানে মূলত অর্থনৈতিক আদান-প্রদান হত, পরবর্তীকালে এটি বদলে গেল Paypal এ। এরপর মহাকাশযাত্রা স্বপ্নকে পূরণ করার জন্য সে তৈরি করল তার তৃতীয় কোম্পানি নাম দিল SpaceX। কিন্তু তাকে হতাশ করে দিয়ে মুখ থুবড়ে পড়ল তাদের প্রথম রকেট, মাত্র 33 সেকেন্ডেই। ব্যর্থ হলো দ্বিতীয় এবং তৃতীয় রকেটিও। পরিস্থিতি এমন দাঁড়ালো। যদি আর একবার সে ব্যর্থ হয় তবে পথে বসতে হবে।
কিন্তু সমস্ত কিছু বাজি রেখে চতুর্থ রকেট লঞ্চ করে ফেলল এই জেদি মানুষটি এবং তারপরেই সকলকে অবাক করে দিয়ে এই রকেট পৌঁছে গেল পৃথিবীর অরবিট পর্যন্ত। তারপর 2008 সালে স্পেসএক্স নাসার সাথে একটি প্রজেক্টে যুক্ত হল। 2012 সালে তাদের পাঠানো ফ্যালকন-9 পৃথিবীর প্রথম প্রাইভেট কোম্পানির রকেট ছিল। যা প্রায় 453 কেজি সামগ্রী নিয়ে পৌছে গেছিল মহাকাশে।
আরও পড়ুন:সুন্দর পিচাই কিভাবে গুগলের সিইও হয়ে উঠলো, আনটোল্ড স্টোরি!
এছাড়াও সে কিনে নেয় Tesla নামের একটি কোম্পানিকে। যারা বৈদ্যুতিক শক্তি ব্যবহার করে চালানো যায় এমন গাড়ি তৈরি করতো। এই কোম্পানি প্রথম অবস্থায় খুব একটা লাভ সম্মুখীন না হলেও ধীরে ধীরে এর জনপ্রিয়তা বাড়তে লাগল সারা পৃথিবী জুড়ে। আমরা এতক্ষন কথা বলছিলাম এলন মাস্কের ব্যাপারে। Elon Musk সদ্য পৃথিবীর সবচেয়ে ধনীতম ব্যক্তি হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেছেন। তিনি স্বপ্ন দেখেন যে সমস্ত স্বপ্ন বিজ্ঞানীরা বহু যুগ ধরে দেখে আসছেন। যা সাধারণ মানুষের কাছে নেহাতই রূপকথা বলে মনে হয়।
সেসব তিনি সত্যি করে দেখাবেন। তিনি বিশ্বাস করেন 2060 এর মধ্যেই আমরা মঙ্গলে পাড়ি দিতে পারব। তিনি চান আগামী প্রজন্মের চোখে অভিশাপ নয় বরং শ্রেষ্ঠতম আশীর্বাদ হিসেবে বিজ্ঞানকে তুলে ধরতে। ভালো থাকুন এলন মাস্ক তিনি প্রমাণ করে দেখিয়েছেন শুধুমাত্র স্বপ্ন দেখলেই হয় না স্বপ্ন সত্যি করার জন্য পরিশ্রম করতে হয়।
Cradit- UltiMad Media YouTube/Sujoyneel
আরও পড়ুন:এক হাতে ২০০০ শিশুর হার্ট অপারেশন কারা গায়িকা !
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন