র্তমান সময়ে বলিউডপাড়ায় এক অতি পরিচিত নাম সানি লিওন। একসময় নীল সিনেমার তারকা খ্যাতি থাকলেও বর্তমানে থেকে বলিউড অভিনেত্রী হিসেবেই বেশি পরিচিত। ভারতীয় চলচ্চিত্র জগতে এসে তুমুল ঝড় তুলেছেন ইন্দো-কানাডিয়ান বংশোদ্ভূত এই অভিনেত্রী। তবে বলিউড অভিনেত্রী হিসেবে তিনি নিজেকে সর্বসাধারণের মাঝে সবচেয়ে বেশি তুলে ধরলেও। তার অধিক পরিচয় একেবারে মুছে যায় নি। অনেকের মনে প্রশ্ন জাগে তিনি কিভাবে সেই অন্ধকার জগত থেকে ফিরে এসে বলিউডের মতো বিশ্বনন্দিত এবং জনপ্রিয় চলচ্চিত্র শিল্পে এসে নিজেকে স্থায়ী করেন। এর আগে কিভাবেই বা নীল জগতের মতো অন্ধকার জগতে পা রেখেছিলেন? সেটিও একটি প্রশ্ন।

 আজ বলবো সানি লিওনের পূর্ণাঙ্গ জীবনের কথা এবং অবাক করা সব তথ্য। একইসাথে তার স্বামী সন্তান সংসার এবং গোপনীয় সিনেমায় অভিনয়ের পর তার মা যেদিন প্রথম জেনেছিলেন সেদিন কি বলেছিলেন এই সকল বিষয়ে বিস্তারিত জানতে আমাদের সাথেই থাকুন।


 1981 সালের 13 ই মে জন্মগ্রহণ করেন করেনজিত কউর ভোরহা. যিনি বর্তমানে সানি লিওন নামে পরিচিত। তিনি অন্টারিও শহরে পাঞ্জাবি বাবা মার ঘরে জন্ম নেন। তার বাবা তিব্বতে জন্মগ্রহণ করেন এবং দিল্লিতে বেড়ে ওঠেন। তার মা ছিলেন তিনি ছিলেন হিমাচল প্রদেশের। তরুণী থাকাকালীন সময়ে সানিলিওন খুবই খেলাধুলা প্রেমিক ছিলেন এবং ছেলেদের সাথে রাস্তায় হকিও খেলতেন। তার পরিবার শিখ ধর্মালম্বী ছিল এই কারণে পাবলিক বিদ্যালয় যাওয়ার বিষয়ে অনিরাপদ বোধ করত তার পরিবার। সানিলিওনের পড়াশোনা কানাডাতে।

 মজার ব্যাপার হলো ক্লাসে খুব নম্র লাজুক বলে পরিচিত ছিলেন তিনি। বয়স তখন 19 বছর। একদিন বন্ধুদের সাথে DVD এনে নীল ছবি দেখেন। ওই সময় সানি এক জার্মান বেকারি তে চাকরি পেয়েছেন। পর একটা ট্যাক্সন রিটারমেন্ট ফার্মে কাজ নেই। সানির পরিবার তখন কানাডা থেকে আমেরিকায় চলে যায়।সানি তখন অরেঞ্জ কাউন্টিতে পেডিয়াট্রিক নার্সিং এর ওপর পড়াশোনা করছেন। নিজের খরচ চালাতে হয়। আর যাই করেন তাদের মতে পোষাচ্ছিল না। সানির এক বান্ধবী ছিলেন বার ডান্সার তার সূত্র ধরেই সানির সঙ্গে পরিচিত হয় জন্স স্টিভেন্স যিনি হলেন মূলত একজন এজেন্ট.

 

সেই এজেন্টের হাত ধরেই সানির পরিচয় হয় অ্যালেনের সাথে। যে আ্যলেন হলেন পেন্টহাউস ম্যাগাজিনের ফটোগ্রাফার। সানি হল করণজিৎ এর ডাকনাম। আর এর সাথে পেন্ট হাউসের সাবেক মালিক বব গুচিওনে যোগ করেন লিওন। ব্যস, করণজিৎ হয়ে গেলেন সানি লিওন। নীল ছবির প্রস্তাব পাওয়ার পর। সানি লিওন বেশ দ্বিধাদ্বন্দ্বে ছিলেন অর্থকষ্টে ছিলেন বলেই অন্ধকার এই জগতে আসতে বাধ্য হন তিনি। তবে তিনি জানিয়েছিলেন তার এই পেশা নিয়ে খুশি ছিলেন না তার বাবা মা। তারা চাননি মেয়ে এই পেশায় আসুক। পেন্ট হাউস ম্যাগাজিন নগ্ন ফটোশুট যখন প্রকাশিত হয় তখন তার বাবা-মা বেঁচে ছিলেন। বাবা মার থেকে লুকিয়ে রাখতে  তাদের জানান নি ফটোশুটের কথা। 


এই প্রসঙ্গে তিনি জানান পেন্টহাউস ম্যাগাজিনের প্রথম যখন আমার ছবি ছাপা হয় তখন বাবা-মা জীবিত ছিল। এ বিষয়ে তারা জানতে পারেননি কারণ পাড়ার সব দোকানে গিয়ে সে ম্যাগাজিনগুলো আমি কিনে নিতাম। তবে সানি এই কথা বেশিদিন লুকিয়ে রাখতে পারেনি তার বাবা-মার কাছ থেকে.

 

sunny brother father & mother

জানাজানি হওয়ার পর নাকি ভীষণ কষ্ট পেয়েছিলেন তারা। আর এটি তাদের সম্পর্কের ক্ষেত্রে প্রভাব ফেলে। সেই সময় মেয়ের এই ধরনের কাজ তাদের অবাক করেছিল। তাদের মন্তব্য ছিল এমন তুমি নগ্ন হয়েছিলেন এসব করার আগে একবারের জন্য জানানোর প্রয়োজন মনে হয়নি বাবা-মা'র এমন প্রশ্নের মুখে পড়তে হয়েছিল সানিকে। তবে সম্পর্কের অবনতি হলেও সম্পর্ক নষ্ট হয়নি। 2008 সালের মৃত্যুর আগে সানির হাতে শেষবারের মতো পানি খেয়ে ছিলেন তার মা। তার দুই বছর পর 2010 সালে তার বাবা মারা যান নীল জগতে কাজ করার পূর্বে সানি লিওন প্রথম একটি জার্মান বেকারিতে কাজ করতেন। এরপর জিবিকার  তাগিতে পরবর্তীতে টেক্স রিটারমেন্ট ফার্মে কাজ করেন। 2020 সালে অ্যাডাল্ট এন্টারটেইনমেন্ট এক্সপোতে আর প্রথমদিকে প্রচারমূলক উপস্থিতিতে।  নার্স হিসেবে অধ্যায়নকালে জনস স্টিভেন এর সঙ্গে তার পরিচয় করিয়ে দেন একজন বহিরাগত নৃত্যশিল্পী সভাপঠি।স্টিভেন যিনি ছিলেন একজন এজেন্ট। পরবর্তীতে পেন্টহাউস ম্যাগাজিনের আলোকচিত্রে জে আ্যলেনের সাথে লিওনের পরিচয় করিয়ে দেন। তার প্রাপ্তবয়স্ক কর্মজীবনের জন্য একটি নাম ঠিক করতে।


 

তিনি আসল নম হিসাবে সানি নামটি উল্লেখ করেন এবং লিওন নাম কি করেন পেন্টহাউস পত্রিকার সাবেক মালিক বব গুচিওনে । পেন্টহাউস ম্যাগাজিনের জন্য পেন্টহাউস পেইড অফ দ্য মান্থ হিসেবে মার্চ 2001 সংখ্যার জন্য ক্যামেরার সামনে দাঁড়ান তিনি।  পরবর্তীতে হলিডে ফিচারস হাসলার হানি হিসেবে হাসিনার ম্যাগাজিনের 2001 এর সংস্করণে অনেকগুলো ম্যাগাজিনের কাভার গার্ল হওয়ার সুযোগ পান তিনি। এর মধ্যে রয়েছে চেরি, মায়েস্টিক ম্যাগাজিন, হাই সোসাইটি, শয়ানক, এভিএন অনলাইন, লেগ ওয়ার্ল্ড, ক্লাব ইন্টারন্যাশনাল এবং লোরিডার। 

 

2003 সাল সানির ক্যারিয়ারের টার্নিং পয়েন্ট শুরু হয়। তিনি নির্বাচিত হন পেন্টহাউস পেড হিসেবে। এই বছরের পর্নো ছবির অন্যতম সেরা নির্মাতা প্রতিষ্ঠান ভিভিড এন্টারটেইনমেন্টের সঙ্গে তিন বছরের চুক্তিতে আবদ্ধ হন। 


আরও পড়ুন:শাহরুখ খানের ছেলে আরিয়ান খানকে মুম্বাই ক্রুজ ড্রাগ মামলায় গ্রেফতার করেছে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ ব্যুরো- পড়ুন বিস্তারিত

 

তবে চুক্তির শর্ত অনুসারে কেবল লেসবিয়ান চরিত্রে অভিনয় করতে থাকেন তিনি। সানি অভিনীত প্রথম ছবি দিয়ে বের হয় সানি নামেই। আর এটি মুক্তি পায় 2005 সালের ডিসেম্বর মাসে। ভিভিড এন্টারটেইনমেন্টের ব্যানারে বের হয় এর পরের ছবিটি ।  ভার্চুয়াল ভিভিড গার্ল সানি লিওন এভাবে কোনো অভিনেত্রীর নামের ছবি প্রকাশের ঘটনায় ভিভিড এর ইতিহাসের প্রথম। এখানে তার সঙ্গে অভিনয় করেন বিকিলা ম্যান্ডেস,ডেইজে ম্যারি ছবিটি তাকে এনে দেয় এভিএন সম্মাননা। 


এর আগে  16 বছর বয়সে পড়াশোনা কালীন সময়ে সানিলিওন অন্য বিদ্যালয়ের একটি বাস্কেটবল খেলোয়াড়ের কাছে কুমারিত্ব হারান এবং 18 বছর বয়সে তার উভকামিতা আবিষ্কৃত হয়। নীল জগতে এমন একটি জগত যেখানে স্বেচ্ছায় কখনো কেউই পা রাখেন না। বহু তরুণী বিভিন্ন সমস্যায় নীল দুনিয়ায় ঢুকতে বাধ্য হন। তবে সানি লিওনের ক্ষেত্রে বিষয়টা একেবারেই নতুন। কারো প্ররোচনায় বা কোন পরিস্থিতির চাপে নয়। নিজের ইচ্ছেতেই শুধুমাত্র অর্থলোভে নীল দুনিয়ায় পা রেখেছিলেন তিনি। 2003 সালের পেন্টহাউস বর্ষসেরা পেটস এবং ভিভিড এন্টারটেইনমেন্টের একজন চুক্তি তারকা ছিলেন।

 

সানি লিওন ম্যাক্সিমাম বিশ্বসেরাদের একজন হিসেবে নির্বাচিত হন 2010 সালে। 2007 সালের মার্চ মাসে আবারও সানির সঙ্গে চুক্তি করে ভিভিড চুক্তির আওতায় 6 টি ছবিতে অভিনয় করেন সানি লিওন। আর এবারই প্রথম কোন পুরুষ অভিনেতার সঙ্গে কাজ করতে সম্মতি জানান তিনি।সানির বাগদত্তা ম্যাট এরিকসন এই সিনেমায় কো আর্টিস্ট এর  ভূমিকায় অভিনয় করেন। পুরুষের সঙ্গে প্রথম ছবিতে সানি যে অভিনয় করেন সেটির নামতো সানি লাভস ম্যাট ছবিটির থেকে 2009 সালের সেরা নারী অভিনেত্রীর পুরস্কার এনে দেয়। একসঙ্গে কয়েকটি ছবিতে অভিনয়ের পর সনি উপলব্ধি করেন ম্যাটের সঙ্গে টানা অভিনয় তার বাজারদর কমিয়ে দিচ্ছে। এরপর তিনি অন্য অভিনেতার সঙ্গে অভিনয় করতে শুরু করেন। যাদের মধ্যে রয়েছে টমি গান, চার্স টের,জেম্স ডিন প্রমুখ। কিন্তু ওই সময় মানসিকভাবে এখনকার মতো শক্ত ছিলেন না সানি। একেকদিন একেক জন পুরুষের সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক করতে হতো। ব্যাপারটা সানির কাছে অনেকটা মানসিক অত্যাচারের বীভৎস লাগতো। সেই সবার কথা তিনি বলেছেন বিভিন্ন সাক্ষাৎকারে। বিস্তার অর্থ রোজগার করেছেন.

 

তবে তাতে শান্তি পান নিয়ে একবিন্দুও। তাই তিনি অন্ধকারাচ্ছন্ন অংশের জগত থেকে ফিরে আসার চিন্তা করতে লাগলেন। তারপর তার জীবন পাল্টে যায় 2011 সালে। সে বার তিনি  ভারতের বিগ বসের নাম লেখান তখনই সানির উপর নজর পড়েছে মহেশ ভাট কন্যা পূজা ভাটের। জিসম টু' ছবির জন্য সানিকে প্রস্তাব দেন পূজা। অন্ধকার জগত থেকে ফিরে আসার এমন সুযোগ হাতছাড়া করেননি  সানি। আর এখন সময়ের সেরা আইটেম গার্লের মধ্যে একজন হচ্ছেন সানিলিওন এবং বর্তমানে কাজ করছেন হিন্দি চলচ্চিত্রে। নিয়মিত 2011 সালের সানি লিওন বিয়ে করেন ড্যানিয়েল ওয়েবার কে। তাদের যমজ ছেলে সন্তান আছে এছাড়া 2017 সালের জুলাইয়ে মহারাষ্ট্রের লাতুর গ্রাম থেকে একটি 21 মাসের মেয়েকে দত্তক নিয়েছেন এই দম্পতি।

 বলিউড অভিনেত্রী সানি লিওনের জীবনী বেরিয়েছে বলিউডের ওয়েব সিরিজে। সিরিজ টির নার  শ্রীরাম করণজিৎ কৌর আনটোল্ড স্টোরি অব সানি লিওন। সিরিজটি প্রচার হতে এর নাম নিয়ে শুরু হয় বিতর্ক। তবে কেউ কেউ একে প্রচারের একটি কৌশল হিসেবে দেখছেন। সানিলিওনের আসল নাম করণজিৎ কৌর ভোরা। 'কৌর' শব্দটি শিখ সম্প্রদায়ের লিঙ্গ সমতার প্রতীক হিসেবে ব্যবহৃত করে.

 

এটি সানি লিওনের নামের সঙ্গে ব্যবহার করায় এই সম্প্রদায়ের লোকেরা খেপেছে। তাদের মতে সানি লিওনের জীবনী ভিত্তিক ওয়েব সিরিজের শব্দে এই শব্দটি ব্যবহার করায় তাদের ধর্মীয় অনুভূতি আহত হয়েছে। Zee5 নামে অনলাইন  স্ট্রিমিং প্লাটফর্মে সিরিজটির প্রথম পর্ব প্রকাশিত হয় এরপর থেকেই শুরু হয় বিতর্ক। শিখরা রাজনীতিবিদ মাহিন্দ্রা সিং  জি ফাইভ এর মালিক সুভাষচন্দ্র কে একটি চিঠি পাঠান। সেখানে ওয়েবসাইট থেকে ওই সিরিজকে  সরিয়ে ফেলতে বলেন।  অথবা সানি লিওনের জীবনী ভিত্তিক ওয়েব সিরিজের নাম থেকে কৌর শব্দটি মুছে দিতে বলেন। কিন্তু সুভাষচন্দ্র জানিয়েছেন জীবনের সানি লিওনের তাই এর নাম পরিবর্তন করা হচ্ছেনা। কেননা প্রত্যেক অভিনেত্রী তার প্রকৃত নাম ব্যবহারের অধিকার রয়েছে। করণজিৎ কৌর কিংবা সানি লিওন এখন স্বাভাবিক জীবনে ফিরেছেন। অন্ধকার জগত থেকে ফিরে বলিউডের সুনাম কুড়িয়েছেন। অর্থবিত্ত কম নেই। তবে শুনতে অদ্ভুত শোনালেও এটাই সত্যি যে আগের জীবনে ভুলটা আজীবনী তার নামের সাথে লেগে থাকবে। সেটা শুধুমাত্র আমি আপনি নন সানিলিওন নিজেও স্বীকার করেছেন একাধিক বার।

 

সাক্ষাতকারে তিনি বারবার তার অনুতপ্ত এর কথা জানিয়েছেন। জানিয়েছেন তার শঙ্কার কথা তার সন্তানরা যখন বড় হবে তখন হয়তোবা না চাইলেও মায়ের নীল ছবি দেখতে বাধ্য হবে আশেপাশের মানুষদের প্ররোচনায়। একজন মায়ের জন্য এটাতে বিব্রতকর বিষয় আর কি হতে পারে। আপনারা হয়ত অনেকে বাজে কমেন্ট করতে পারেন এমন একজন তারকা জীবনী নিয়ে আলোচনার কোনো দরকারই ছিল না তবে আমার মতো মনে হয়েছে ভিডিওটি থেকে আমাদের মা-বোনদের শিখার অনেক কিছুই আছে। যে নিজের মেয়েকে সব সময় কাছে রাখতে হয় এবং সর্বোচ্চ খোঁজখবর রাখতে হয়। যাতে করে তারা কোনো অনৈতিক কাজে জড়িয়ে না পরে। অন্যদিকে আবার মেয়েদের শেখার আছে তারা যেন অর্থলোভে দেহব্যবসার মত কোন কাজে জড়িয়ে না পড়ে। যার কারণে ঠিক সানিলিওনের মতোই সারাটা জীবন যাতে আফসোস না হয়। 

আরও পড়ুন:চায়নার অর্থনীতি হচ্ছে দুর্বল, 2 লক্ষ মানুষকে বেকার করে , রিয়েলস্টেট কোম্পানি হচ্ছে বন্ধ!

Post a Comment

নবীনতর পূর্বতন