Today News ডেস্ক: করোনা আক্রান্তের নিরিখে গাঁড় যেই মুহুর্তে শীর্ষস্থানে আছে উত্তর ২৪ পরগনা, এমনটাই বলছে পরিসংখ্যান। এই জেলায় বর্তমানে পজিটিভিটির হার ৪৬.৭ শতাংশ। অর্থাৎ, একশটি নমুনা পরীক্ষা করলে ৪৬.৭ জনের মধ্য নমুনা পজিটিভ আসছে। সপ্তাহখানেক আগে এই অবস্থা ছিল কলকাতায়। গত বুধবার শহরে পজিটিভিটির হার ছিল, ৪৭.২৫ শতাংশ। এখন তা কমে হয়েছে ৪৪.৪ শতাংশ। লাগোয়া দক্ষিণ 24 পরগনা এবং হাওড়ায় বর্তমানে পজিটিভিটি রেট ৩১.২৫ এবং ২৯.৭৫ শতাংশ। সারা রাজ্য পজিটিভিটি রেট বর্তমানে ২৯.০৬ শতাংশ যেটা সরকারি সূত্রে খবর। ফলে স্বাভাবিকভাবেই, উত্তর ২৪ পরগনা এবং কলকাতা স্বাস্থ্য ভবনের মাথাব্যথা হয়ে উঠেছে।
এই অবস্থায় রাজ্য স্বাস্থ্য দপ্তরের কোভিড(Covid-19) বুলেটিন বলছে বুধবার রাজ্যে দৈনিক আক্রান্তের সংখ্যা ২০,৩৭৭ , মৃত্যু ১৩৫ জন। এদিনও দেখা গিয়েছে, কলকাতার ৩৯৮৯ চেয়ে বেশি বেশি মানুষ উত্তর ২৪ পরগনায় প্রায় ৪০৯১ জন গত 24 ঘন্টায় কোভিড পজিটিভ হয়েছেন।
যেভাবে সংক্রমণ বাড়ছে, তাতে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে প্রশাসনের আরো কঠোর হওয়া উচিত বলে দাবি তুলছেন জন স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা। কলকাতা পুরসভার গত সপ্তাহের তুলনায় ৩ শতাংশ পজিটিভিটি হার কমলো কিভাবে?
পুরসভার স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মীদের ব্যাখ্যা, এলাকা নিয়মিত জীবনুমুক্ত করা, আরো বেশি সংখ্যক সেভ হোম চালু করা এবং বাজারে আবাসনে রেপিট অ্যান্টিজেন টেস্ট করার সুফল মিলছে শুরু করেছে কলকাতায়। কলকাতার পূর্ব প্রশাসক ফিরহাদ হাকিম বলেছেন,'শহরে অনেক বিধি-নিষেধ বর্তমানে জারি করা হয়েছে। জীবাণুমুক্ত করার ক্ষেত্রে জোর দেওয়ার পাশাপাশি টেস্ট এবং সেভ হোম বাড়ানোর ক্ষেত্রে জোর দেওয়া হচ্ছে।'নাগরিকরা আরো বেশি মাত্রায় সচেতন হলে পরিস্থিতি কিছুদিনের মধ্যেই আরো অনেকটা নিয়ন্ত্রণে চলে আসবে বলে আশাবাদী ফিরহাদ।
কলকাতার মতো জেলা শহরগুলোতেও সেফহোম বাড়াতে হবে, এলাকা জীবাণুমুক্ত করা এবং রেপিড এন্টিজেন টেস্ট বাড়ানোর কথা বলেছে স্বাস্থ্য ভবন। উত্তর 24 পরগনা জেলায় স্বাস্থ্য দফতরের এক কর্তা জানিয়েছেন, সেফহোম এর সংখ্যা বাড়ানো থেকে শুরু করে রাষ্ট্রের সংখ্যা অনেক বেড়েছে। প্রচারের বিশেষ জোর দেয়া হয়েছে তাহলে সংক্রমনের নিরিখে এইজেলা কলকাতাকে ছাপিয়ে যাচ্ছে কেন? জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ স্বাতী নন্দী চক্রবর্তীর আশঙ্কা,'বাজারে গেছি যে ভূমির এবং বাস-অটো থেকেই অনেক বেশি সংখ্যায় মানুষ সংক্রমিত হচ্ছেন এই জেলায়।'
তবে এ থেকে বাঁচার উপায় কি?গতবছর কোভিড সংক্রমনের প্রথম পর্যায়ে যেমনটি হয়েছিল, এবারও অন্তত কলকাতা এবং উত্তর 24 পরগনায় যানবাহনে শারীরিক দূরত্বও রক্ষার্থে কে জোর দেওয়ার পাশাপাশি বাজার গুলি ঘিঞ্জি জায়গা থেকে বড় জায়গা সরানো সরালে ফল মিলবে বলে মনে করছেন স্বাতী। চিকিৎসক অরিন্দম বিশ্বাস আবার মনে করছেন,'প্রশাসন সংক্রমণ ঠেকাতে অনেক পদক্ষেপ করেছে। কিন্তু নাগরিকদের সতর্ক হতে হবে। না হলে সংক্রমণ ঠেকানো সম্ভব নয়।'অরিন্দমের আক্ষেপ,'বাইরে বেরোলে জোড়া মাক্স পড়ার কথা বারবার বলা হলেও, জোড়া মাক্স তো দূরের কথা, একটি বাক্সে মুখের বদলে থুতনিতে ঝুলছে!'অরিন্দম এর সঙ্গে সহমত রাজ্য স্বাস্থ্য অধিকর্তা অজয় চক্রবর্তী ও। তিনি বলেছেন সংক্রমণ ঠেকাতে সাধ্যমত চেষ্টা করা হচ্ছে। তবে এখনই কিছু মানুষের হুঁশ ফিরছে না এটা খুবই দুর্ভাগ্যজনক।
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন