চলতি ২০২১ সালের ১৯শে ফেব্রুয়ারি ভারত তার নিজস্ব প্রযুক্তির তৈরি এয়ার লাউঞ্চ বেসড নতুন প্রজন্মের ‘হেলিনা’ এন্টি-ট্যাংক গাইডেড মিসাইলের সফল পরীক্ষা সম্পন্ন করে। মুলত রাজস্থানের পোরখান রেঞ্জে হেলিকপ্টার থেকে হেলিনা’ এন্টিশীপ মিসাইলের প্রযুক্তিগত সক্ষমতা যাচাই করা হয়। সাত কিলোমিটার রেঞ্জের মধ্যে আকাশ থেকে শত্রু পক্ষের ল্যাণ্ড বেসড ট্যাংক এবং সামরিক যান ধ্বংস করতে ‘হেলিনা’ ক্ষেপণাস্ত্রকে বিশেষভাবে ডিজাইন করেছে ভারতের ডিফেন্স রিসার্চ অ্যান্ড ডেভলপমেন্ট অর্গানাইজেশন (ডিআরডিও)।
তৃতীয় প্রজন্মের ‘স্টেইন এণ্ড ফরগেট’ ‘হেলিনা’ এন্টি-ট্যাংক মিসাইলের আরেক নাম ‘ধ্রুবাস্ত্র’। ভবিষ্যতে ক্ষেপনাস্ত্রটি ভারতের নিজস্ব তৈরি এডভান্সড লাইট হেলিকপ্টারে সংযোজন করা হবে। নিক্ষেপের পর এটিকে গাইড করে ‘ইনফ্রারেড ইমেজিং সিকার’। স্থির বা দ্রুতগামী যেকোন লো-সিলুয়েট ট্যাঙ্কের বিরুদ্ধে দিবা-রাত্রী অভিযান চালাতে সক্ষম এই মিসাইল।
ভারতের প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের সূত্রে জানা যায় যে, ভারতের নিজস্ব প্রযুক্তির তৈরি রুদ্র লাইট হেলিকপ্টারের দুই পাশে চারটি করে আটটি ‘হেলিনা’ সংযোজন করা হবে এবং এটি নিজ দেশে উৎপাদিত হওয়ায় ভারতের এই ধরনের এন্টি-ট্যাং মিসাইলের অতি মাত্রায় বিদেশ নির্ভরতা অনেকটাই কমে আসবে বলে মনে করা হয়।
ভারতের ডিআরডিও এর তথ্য অনুযায়ী, হেলিনা বা ধ্রুবাস্ত্র একটি তৃতীয় প্রজন্মের অত্যাধুনিক অ্যান্টি-ট্যাঙ্ক মিসাইল (এটিজিএম) সিস্টেম এবং এটিকে ভারতের নিজস্ব প্রযুক্তির তৈরি হালকা ধ্রুব এ্যাটাক হেলিকপ্টারে ব্যবহারের উপযোগী করে ডিজাইন করেছে।
ডিআরডিও আসলে ২০০৯ সাল থেকেই তাদের তৈরি নাগ এন্টি-ট্যাংক মিসাইল উন্নয়নের ব্যাপক চেষ্টা করে যাচ্ছে। এই প্রজেক্টে ইতোমধ্যেই প্রায় ৪৭.০০ মিলিয়ন ডলার ব্যয় করা হয়েছে। স্থল ও বিমান দুই প্লাটফর্ম থেকেই মিসাইলটি লাউঞ্চ করা যাবে। স্থল প্লটফর্মের ক্ষেত্রে এর পাল্লা ৪ কিলোমিটার। অন্যদিক আকাশ থেকে ৭ কিলোমিটার দূরের লক্ষ্যবস্ত ঘায়েল করা সম্ভব। ভারতীয় সেনাবাহিনীর ভাষ্যমতে, আগামী দুই দশকে তাদের বহরে প্রায় ৪০ হাজারের কাছাকাছি এন্টি-ট্যাংক মিসাইল প্রয়োজন হতে পারে। সেক্ষেত্রে ভারত তার নিজস্ব প্রযুক্তির এন্টি-ট্যাংক মিসাইল সিস্টেম দিয়ে চাহিদা পূরণে প্রবলভাবে আশাবাদী।
তবে বর্তমানে আধুনিক ড্রোন প্রযুক্তির যুগে এই জাতীয় নতুন প্রজন্মের এয়ার টু গ্রাউণ্ড ‘স্টেইন এণ্ড ফরগেট’ ‘হেলিনা’ এন্টি-ট্যাংক মিসাইলটিকে হেলিকপ্টারের পাশাপাশি ভারতের সামরিক বাহিনীর কমব্যাট ড্রোন (ইউএভি) সিস্টেম থেকে ফায়ার করার উপযোগী করে কিংবা সক্ষমতা প্রদান করে বিশেষভাবে ডিজাইন করা উচিত। যাতে যে কোন ধরণের যুদ্ধ পরিস্থিতিতে শত্রু পক্ষের গ্রাউণ্ড ফোর্সের আগ্রাসন বা আক্রমন কার্যকরভাবে রুখে দেয়া সম্ভব।
আপনার মূল্যবান মতামত জানান কমেন্ট বক্সে।
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন