পনারা কোম বেশি সবাই হয়ত জানেন চায়না বিশাল ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে  সম্প্রতি ঘটে যাওয়া বন্যার জন্য (17 জুলাই 2021)। আর এর কিছু অর্থনৈতিক গণনা সামনে আসছে । প্রায় 10 বিলিয়ন ডলার ক্ষতি ইতিমধ্যেই চীন সরকার উঠিয়েছে‌।আর সম্ভাবন আছে এই বন্যা যদি এমনভাবে চলতে থাকে তবে এই ক্ষতির পরিমাণ দাঁড়াতে পারে 15 থেকে 20 বিলিয়ন ডলার । যে অংকটা অনেক বড় বড় দেশের সেনা বাজেটের সমান‌। তাহলে চায়নার হচ্ছে বিশাল ক্ষতি। 
xxxx
আর এই বন্যায় মোট মৃতের সংখ্যা এটা পৌঁছে গেছে 51 তে । ভয়ের কথা এটি অনেক জন এখানে নিখোঁজ । অর সম্ভাবনা  করা হচ্ছে‌ যে মৃতের সংখ্যা এটি 150 থেকে 200 পর্যন্ত যেতে পারে। আর এটাও হতে পারে চায়না আহত- নিহত ব্যাক্তির পরিসংখ্যান চীন কমিউনিস্ট ‌‌‌সরকার লুকাতে পারে। তার সাথে সাথে আমাদের স্বিকার করতে হবে বন্যাতো‌ পুরো‌ বিশ্বের কোথাও না কোথাও হচ্ছে সম্প্রতি জার্মানিতেও বন্যা হয়েছে । ইউরোপেই সাধারনত বন্যা দেখা গেছে । ইন্ডিয়াতেও আজকের সময়ে দেখলে দেখা যাবে মহারাষ্ট্রে বন্যা হয়েছে। প্রায় 30 থেকে 40 জন মারা গিয়েছেন। 
 


এবার চায়নায়তো বলা হচ্ছে  গত 1000 বছরেও এত বৃষ্টি হয়নি যতটা সম্প্রতি কিছুদিন আগে হয়েছে। যার কারনে প্রতিটি নদী ওভারফ্লো হয়ে গেছে। ড্যাম এখানে বৃষ্টির জল ধরে রাখতে অক্ষম হয়ে পড়েছে । আর এই কারনের বন্যার দেখা দিয়েছে । কোথাও না কোথাও মানুষকে ভাবতে হবে যে জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব পড়ছে সেটাকি আমরা সহ্য করতে পারবো পরবর্তীতে। বৈজ্ঞানিকদের দাবি এটাতো সবে শুরু হয়েছে‌। ভবিষ্যতে বন্যা আরও বাড়বে পুরো দুনিয়াতে। 


আর যদি শুধুমাত্র চায়নার কথা বলি, তবে এই বন্যা হয়েছে  হেনানে (Henan) এ । একে বলা হয়ে থাকে 'The birth place  on chinese civilization'। এটাও কোথাও কোথাও পড়বেন। হেনানের জায়গায় অনেকে জংজাও(Zhongzhou) নাম ও দিয়ে থাকে ।  জংজাও হল হেনানের রাজধানী (capital) আর সেজন্য ‌‌‌‌হেনানের জায়গায় জংজাও ব্যবহার করেন অনেকে । তবে আন্তর্জাতিক ভাবে এটাকে বলা হচ্ছে ' Henan flood of China'। 
xxxx
 
এখানে‌ আপনি‌‌ ভেবে দেখুন ‌‌‌‌‌‌যেখান  থেকে চীনা সভ্যাতার শুরু হয়েছে । তাহলে সেখানে কি পাওয়া যেতে পারে । ঠিক ভেবেছেন । চীনের আদি‌ জনবসতির ‌‌‌‌বা সেখানে । হেনানের পাশ‌ দিয়ে যায় প্রচুর‌ নদী ‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌ইয়ালো রিভার, হুয়াহি নদী, হায়হি নদী এবং ইয়াংচে নদী ছাড়াও  এখানে 1,030 টি নদী আপনি দেখতে পাবেন । আর এখানে সম্পূর্ন নিকাশী অঞ্চল দেখতে‌‌ পাবেন 50 স্কোয়ার কিলোমিটারের। এর এখানে রাজধানী জংজাও এর জনবসতি 1 কোটি 20 লক্ষ । তাহলে ঘন জনবসতি সম্পূর্ণ এলাকা প্রচুর নদীর সমন্বয়ে। এখানে দুর্ঘটনা ‌‌‌‌‌‌যে কোনসময়েই হতে পারতো যদি বিপুল বৃষ্টিপাত হতো। তবে এখানে চায়নার একটি ব্যাপারে  আত্মবিশ্বাসী ছিল যে আমরা ড্যাম,  নদী পথ এত বানিয়ে রেখেছি যে  বন্যা হওয়া অসম্ভব। আর যদি প্রচুর পরিমাণে বৃষ্টি হয় তাহলে ড্যাম এ জমবে চিন্তার কোন কারন নেই ।
 



কিন্তু এমন অবস্তায় চায়না কে বৃষ্ঠিতে নাজেহাল করে‌ দিয়েছে বৃষ্টি এত হয়েছে যে  গত 1000 বছরেও এমন ঘটনা ঘটে নি। আর এখানে ড্যাম ও সামলাতে পারেনি এই জলের চাপ। চায়না এখনো চেষ্টা করছে যেন সরকারের উপর কোন রকম চাপ সৃষ্টি না হয় কেউ যেন আঙুল না তোলে সরকারের উপরে । এ‌খানে গ্লোবাল টাইমস ' ড্যাম যুক্ত নয় সরাসরি হেনান বন্যা কারন, এটি হয়েছে ভারি বৃষ্টির কারনে এক্সপার্টদের বক্তব্য' । কারন ড্যাম এর উপর যদি অভিযোগ জানায় তবে চিনা কমিউনিস্ট সরকারের মথা ব্যাথার কারন হয়ে উঠবে তাই এখানে ড্যামকে দোষমুক্ত করতে Global Time এসব আর্টিকেল ছড়িযে চীন‌ তার ভাবমূর্তি ‌‌‌পরিস্কার করছে । চীনের মানুষ তথা পুরো‌বিশ্বের কাছে । 


কিন্তু ‌‌‌আসল কথা হলো‌ বহু আর্টিকেলে প্রকাশ পেয়েছে হেনানে বৃষ্টির জনে পুষ্ট ড্যামগুলি অতিরিক্ত জলের চাপ সহ্য না করতে পেরে‌ ভেঙে পড়ে । কিছু কিছু ড্যাম পানির চাপের কাছে‌ হার মেনে‌ জল ছাড়তে বাধ্য হয় । আর যার জন্য এখান কার জনবসতি ছোট ছোট শহরে‌ বিপুল ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে । আর শি-জিং-পিং চেষ্টা করছে‌ যেকোন ভাবে এটা সমাধান হয়ে যায় এখানে 5,700 সেনা মোতায়েন করা হয়েছে। আর পুরো‌ তদারগীর সাথে কাজ করছে সেনা যাতে কোম ক্ষতির সম্মুখীন হয় । 
xxxx

 কিন্তু সত্যতাতো এটাই পরিকল্পনার ব্যার্থতাতো এখানে হয়েছে । তবে এখানে সব থেকে একটি বড় ভয় এদের একটা গুরুত্বপূর্ণ ড্যাম হল এহিটান ড্যাম( Yihetan Dam)  যেটি হেনানের কাছে অবস্থিত। এটিও ভাঙতে পারে । চাইনিজ ইঞ্জিনিয়ারেরা ওয়ার্নিং দিয়েছে এই ড্যাম যদি ধসে যায় তবে সাধারণ ভাবেই হতাহতের সংখ্যা বেশ কিছু বেড়ে যাবে । 
 

তবে আরও একটি কারন বলা যায় চায়নার হেনানে একসময় বেশ জঙ্গল এবং সবুজ জলহাওয়া পূর্ন পরিবেশ ছিল কিন্তু যতই আধুনিক হয়েছে জনবসতি বৃদ্ধি ‌‌‌‌‌‌পেয়েছে । এখানে গাছ কাটা পড়েছে, ইন্ডাস্ট্রি হয়েছে যার কারনে কার্বনের পরিমাণ বৃদ্ধি পেয়েছে, গ্রিনহাউস গ্যাস প্রোডিউস হয়েছে । যার ফলে হিউম্যানিটিও কিছুটা বেড়েছে । তার অর্থ দাঁড়ায় এমন ভারি বৃষ্টি এক প্রকার আমন্ত্রণ জানিয়েই ডেকে এনেছে চায়না। আর এখানে যদি গাছ থাকতো যথা পরামানে তাহলে কিছুটা রক্ষা পেতো বন্যা থেকে । 



তবে আরও একটা কথা থেকে যায় চায়নখয় নিকাশি ব্যবস্থাও কি এতটাই খারপ? যেটা আমাদের এখানে নিকাশি ব্যবস্থার সমস্যা সেটা একই রকম চায়নাতে দেখা যায় । চায়না দাবি করতো হেনান যে অঞ্চলে বন্যা হয়েছে এর শহর গুলিতে বৃষ্টি হলে স্পঞ্জের মত শুষে নিতো । এটি দাবি করে আসছে চায়না বেশ কিছুটা সময় ধরে । আর আজ BBC News এটা বলেই খোঁটা দিচ্ছে আপনার স্পঞ্জ শহরের এমন‌ অবস্থা হলো কি করে । আপনারা বলেছিলেন আপনকদের নিকাশি ব্যবস্থা এত সুন্দর । কখনই এখানে বন্যা হবে না । আর এখানে গ্লোবাল টাইমস এর বক্তব্য 'চাইনিজ এক্সপার্ট রিজেক্ট করছে বিবিসি এর এই রিপোর্ট'। চায়নার স্পঞ্জ‌ শহরের এই ভ্রান্ত ধারণা ভেঙে গেছে‌। যদিও চায়নার দাবি আমরা এমন কখনই বলি নি এটা স্পঞ্জ শহর।
xxxx

CNN এর সূত্রে খবর খুব সম্প্রতি টাইফুন আসছে নাকি আসছে। তবে এখনো প্রর্যন্ত যা বৃষ্টিপাত হয়েছে তাতে টাইফুনের এতটা ভুমিকা নেই। টাইফুন আসতে পারে সেটা নিয়ে চিন্তিত গোটা বিশ্ব কারন টকিওতে অলিম্পিক চলছে। ইন-ফা (In-Fa) নামে টাইফুন যার কারনে প্রচন্ড বৃষ্টিপাত হতে পারে চিনে এবং জাপানে । আর এর জন্য হেনানে এর প্রভাব পড়বে না। 
 


যদি বলি আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়ার কথা তবে দুটি দেশ চিনের সমর্থনে কথা বলছে এক হল পাকিস্তান দুই রাশিয়া। রাশিয়ার তরফ থেকে রাশিয়ার প্রসিডেন্ট ব্লাদিমির পুতিন সংশ্লিষ্ট চিঠি পাঠায় শি-জিং-পিং কে । ইনি বলেছেন আমি খুবই দুঃখিত, এখানে বিপুল ক্ষতি হয়েছে। বলতেই খুবই খারাপ লাগছে। আর আমাদের থেকে যেকোন রকম সহায্য লাগলে রাশিয়া সব সময় চায়নাকে সাহায্য করতে রাজি। পাকিস্তান ও তাদের সেনা দিয়ে সাহায্য করতে চায় চায়নাকে উদ্ধার কাজে তবে চায়না ডিনাই করে তাদের দেশের চিনা ইঞ্জিনিয়ার এবং শ্রমিকদের যথাযত  সুরক্ষা নিশ্চিত ‌‌‌করতে বলে। ইন্ডিয়া এবং আমেরিকা চায়নার বন্যা কে‌ নিয়ে‌ কোন প্রতিক্রিয়া দেননি এখন পর্যন্ত। তবে আপনার ‌‌‌‌‌‌প্রতিক্রিয়া কি? জানান‌ কমেন্টে
 

Post a Comment

নবীনতর পূর্বতন