সম্প্রতি আপনারা হয়ত শুনেছেন , কারণ প্রচুর আর্টিকেল প্রকাশ হয়েছে এই বিষয়টি নিয়ে। চীন ব্যান্ড করে দিয়েছে ইন্ডিয়ান নাবিকদের (Sailors)। আর এটার জন্য ভারতের 20- 21 হাজার চাকরিতে ক্ষতি হতে পারে ভারতের।
Dccan Herald/money control /times of india এর আর্টিকেলে সব জায়গায় এটা উল্লেখ করা হয়েছে, চীন আনঅফিসিয়ালি ব্যান্ড করেছে ভারতের নাবিকদের। একটি হয় অফিশিয়াল ব্যান্ড যেখানে সরকার তার নীতি বানায় এবং কার্যকর করে। সরকার বলবে আমরা ইন্ডিয়ান নাবিকদের পোর্টে প্রবেশ করতে দেব না। আর অপরটি হল আনঅফিসিয়াল ব্যান্ড , যেখানে পোর্ট কে দেওয়া হয় নির্দেশ, যে ইন্ডিয়ান নাবিকদের বন্ধ করে দাও কিন্তু অফিশিয়ালি আমরা সেটা আন্তর্জাতিক স্তরে ঠিক রাখব। আর সেই জন্য আর্টিকেল দেখার পর ভারত সরকারের তরফ থেকে তেমন কোন প্রতিক্রিয়া মেলেনি। ভারতের সরকারের বক্তব্য যে, আমাদের কাছে কোন রকম অফিশিয়াল তথ্য আসেনি চায়নিজ গভারমেন্ট এর তরফ থেকে। যে এরা ইন্ডিয়ান নাবিকদের ব্যান্ড করে দিয়েছে। এটা হতে পারে কোন ব্যক্তির নিজস্ব মতামত ভারত সরকারের তথ্য অনুযায়ী। অফিশিয়ালি চায়না এমন কোন ব্যান্ড লাগায়নি।
তাহলে বলাই যায় যদি চায়না এমন ভাবে পদক্ষেপ নেই ভারতে কি কোন মেয়েকে বিধ্বস্ত করার জন্য। তাহলে ভারতের বেস অনেকটা ক্ষতির সম্মুখীন হতে পারে। বিভিন্ন নাবিকের জীবিকায় টান পড়তে পারে । তবে চায়নায় এই সমস্যা এটির প্রথম প্রকাশ ঘটায় All india seafarer & general workers union । এনাদের বক্তব্য ইন্দ্রোনেশিয়াও একই সমস্যা করছে ইন্ডিয়া ও সাউথ আফ্রিকার সাথে। তবে ব্যাপারটা আলাদা। ইন্দ্রোনেশিয়া মাঝে মাঝে করে থাকে তবে এই সমস্যাটির সমাধান হয়ে যেতে পারে। সবথেকে বড় ব্যাপার হল দ্বিতীয় লেখা টি হল যদি চায়নার মধ্যে ইন্ডিয়ান নাবিক চালিত কোন জাহাজ আসে তাকে পোর্টে জায়গা মিলবে না। আর এই সমস্থা চিঠি পাঠিয়েছে বিদেশ মন্ত্রণালয় কে।
Indonesia opens up crew changes for everyone except crew of Indian & South African nationality.
— All India Seafarers Union (@AllSeafarers) July 23, 2021
China Government is not allowing all those ships to enter into the port just because of this reason all the company has stop calling all the Seafarers from India. pic.twitter.com/6yvmJoqSm6
এদের পেক্ষাপটে দেখতে গেলে চায়না কি করছে সেটাই দেখে নিন। ভারতীয় সংস্থা সূত্রে জানা যায় , যে কোন জাহাজ , এমন নয় ইন্ডিয়ার জাহাজ হওয়া লাগবে । ধরে নিন UK এর একটি কর্গো শিপ পাঠাতে হবে , সৌদি আরব থেকে জাপানে এবং রাস্তায় চায়নার বন্দরেও থামতে হবে । তবে চায়না এখানে কি করছে? যখনি পোর্টে ঢুকতে যাবে তার আগে চেক হবে ওই জাহাজের নাবিক কোন দেশের অধিবাসী। আর ওই নাবিক যদি ইন্ডিয়া থেকে হয় তাহলে পোর্টে ঢোকার অনুমতি মিলবে না। আর চায়নার বক্তব্য ইন্ডিয়ান নাবিকদের সরিয়ে দেও বিশ্বের প্রত্যেকটি জায়গা থেকে তাহলে সঠিক ভাবে পোর্টে ঢুকতে পারবে জাহাজ।
এখানে একটা কথা লক্ষ করলেন কি ? Uk থেকে সৌদিআরব তার পর চায়না হয়ে জাপান তাহলে ইন্ডিয়ানদের এখানে ভুমিকা কোথায় ? দেখুন এখানে আপনাকে বুঝতে হবে সামুদ্রিক নাবিক কে,যে কোন কার্গো শিপ আজ সময় আন্তর্জাতিক ট্রেড কে বজখয় রেঠেছে । আপনার জানা আছে হয়ত আন্তরাষ্ট্রীয় ব্যাপার যে হয় যার 80 শতাংশ সামুদ্রিক পথে হয় । এরোপ্লেন এ খুব কম ট্রান্সপোর্ট হয় । বেশিরভাগ দেখবেন বড় বড় কার্গো শিপে প্রাকৃতিক গ্যাস, পেট্রল, ডিজেল, পর্যন্ত বহন করা হয় । ধান গম নানারকম খাদ্যশস্য ইমপোর্ট এক্সপোর্ট করা হয়। তাহলে আপনি বলতে পারেন সামগ্রিক পথে ট্রেড আন্তর্জাতিক স্তরে এক বিরাট ভূমিকা রাখে। আর ট্রেড যারা পরিচালনা করে তা বেসরকারি কোম্পানি গুলি।
মনে করুন আপনি কোম্পানি খুললেন এবং আপনার কাছে 50-60 টি কার্গো শিপ আছে। এবার এই কার্গো জাহাজ গুলিকে চালাতে বা অপারেট করতে আপনার লাগবে Seafarers। কারণ জাহাজকে জলে নামে দিলেই তো হয় না তাকে চালানোর জন্য প্রায়োজনিয় ট্রেনিং দেওয়া কর্মী চাই প্রয়োজনীয় টিম চাই যারা জাহাজের মেশিনারি থেকে খুঁটিনাটি সব কাজে পারদর্শী থাকে। Seafarers এটি একটি প্রফেশন । অনেক ইন্ডিয়ান আছে যারা হয়ে ওঠেন Seafarers । উনি যান এসব বিদেশি কোম্পানি গুলির কাছে আর বলেন আপনার যতগুলি জাহাজ আছে আমরা তদারগি করবো।
আর আন্তর্জাতিক দৃষ্টিতে যদি দেখেন তবে দেখতে পাবেন তাহলে ইন্ডিয়ার কাছে আছে তৃতীয় লার্জেস্ট সিফেরর। তাহলে বলা যায় দুনিয়াতে প্রায় 10 শতাংশ সিফেরর আপনি পাবেন ভারতিয়। আর মোট সংখ্যা এদের দেড় লাখের আশেপাশে। এটি একটি খুবই লাভবান চাকরি। লাখের অধিক ইনকাম করতে পারে এই চাকরি থেকে। যদি খুব পরিশ্রমই হয় সে। অবশ্যই এই কাজে ঝুঁকি ও থাকে বেশ কিছুটা। যদি জাহাজ ডুবে যায় অথবা হাইজ্যাক হয়ে যায়। অসুস্থ হয়ে পড়ে। এখানে বেশ কিছুটা ঝুঁকির সম্ভাবনা থাকে। তবুও একটি ইন্ডিয়ানদের কাছে একটি গুরুত্বপূর্ণ চাকরি হিসেবে ধরা হয়। কাউকে না কাউকেই তো মোটা অংকের চাকরির জন্য এই জব করতেই হয়। আর এখানে চায়না এটা করার চেষ্টা করছে। ইন্ডিয়ানদের যে এই বড় সেক্টর যেখানে লাখো কর্মীরা কাজ করে পেট চালাচ্ছে। আর চায়না চাচ্ছে এই স্টোর থেকে ইন্ডিয়ানদের চাকরি দিওনা।
চায়না আজ সময় আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে খুব বড় মাপের একটি ট্রেড হাব। সব কার্গো শিপ একবার না একবার হলেও চায়না পোর্ট ভিজিট করে যায়। একটি বড় মাপের জনসংখ্যা বহন করে চায়না সে ক্ষেত্রে আমদানি ও রপ্তানি দুটি হয় পুরোদমে। চায়না এখানে চতুরতার সাথে আন্তর্জাতিক স্তরে সমস্ত জাহাজ কোম্পানিগুলোকে বলছে, আপনি যদি ইন্ডিয়ানদের চাকরি দেন তাহলে আমরা আমাদের পোর্টে এক্সেস দেব না । এখানে কোম্পানিগুলিকে চিন্তা করতে হবে। এক হয় দামি সিফেরর নেই কেননা ইন্ডিয়ান সিফেররা খুব সস্তায় মেলে অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ড এবং অন্য অন্য দেশের তুলনায় । এখানে ওনাদের ভাবতে হবে হতে পারে চায়নার বন্দরের এক্সেস হারিয়ে ফেলি অথবা সব ইন্ডিয়ান সিফেরর কে রিপ্লেস করি। দুদিক থেকে দেখতে গেলে এটি একটি কঠিন সিদ্ধান্ত ।
আরও পড়ুন:চীনে বন্যার কারনে বিশাল ক্ষতি, প্রায় 10 বিলিয়ন ডলারের মাশুল ! বিস্তারিত
তবে শেষমেষ দীর্ঘ মেয়াদী ভাবলে দেখা যাবে । আপাতত ইন্ডিয়ান সিফেরর কম করে দেও। চায়নার চাপ বরদাস্ত করা হোক। কেননা চায়নার গোটা দেশের অর্থনীতি অনেক বড়। আর এটি হল বিতর্ক। তবে একটি কারণ আপনি এটাও বলতে পারেন। হতে পারে কোভিডের কারনে এমনটা হয়েছে। মাঝে একবার কেজ হয়েছিল। কিছুনা নাবিক করোনা পজিটিভ ছিলেন যার জন্য তাদের নিজেদের জাহাজে তাদেরকে করেন্টিন করে দেন। কয়েক সপ্তাহের জন্য। কয়েক সপ্তাহ ধরে তারা বন্দরে পড়ে থাকে। তারপর রীতিমতো ভারতে ফেরে তারা অনেকটা সময় অতিক্রম করার পরে। যদি কোভিড অজুহাত হত তাহলে শুধু ভারত না অনেক দেশেই ডেল্টা ভেরিয়েন্ট এর দেখা মিলছে ।
এখানে দেখা যাচ্ছে সরাসরি ভারতীয় নাবিকদের ব্যান্ড করা মানে এখানে কারন অন্য রকম । কিছুটা অর্থনৈতিক ক্ষতিসাধন যেন করা যায় ইন্ডিয়াকে । আর যে ইন্ডিয়ান সিফেরর এর বডি আছে তাদের বক্তব্য চায়নার টার্গেট একটাই 2025 এর মধ্যে চায়নার সিফেরর দের প্রোমট করা । আর ইন্ডিয়াকে পিছনে ফেলে । এখন অবদ্ধি চায়নার সিফেরর এর সংখ্যা 1 লাখ 20 হাজার । চায়না চায় তাদের নাবিকদের বেতন বৃদ্ধি পাক । কর্মসংস্থান বৃদ্ধি পাক। তবে চায়না এসব যদি করে আনঅফিসিয়ালি তবে ভারত সরকারের পদক্ষেপ নিতে সমস্যা হবে । যদি ভারত সরাসরি চায়নার সাথে কথা বললে তারা এড়িয়ে যাবে যে এমন কিছু আমরা করছি না । এই আমাদের পলেসি ইত্যাদি ইত্যাদি । আমরা পেপারে কোন রকম পরিবর্তন করি নি। কিন্তু পেছন থেকে তারা তাদের কাজ চালিয়ে যাবে। সুতরাং এটি ভারতের কাছে একটি খুব বড় সমস্যা। কোথাও না কোথাও ভারতকে একটি সুষ্ঠু ইনভেস্টিগেশন করা দরকার। দেখতে হবে এখানে সমস্যা কি, আসলে কি সমস্যা আছে। আর যদি হয়ে থাকে তাহলে ইন্ডিয়ানদের কাছে এটি একটি দুঃখের খবর। এ বিষয়ে আপনার বক্তব্য কি কমেন্ট করে জানাবেন।
সূত্র-Dccan Herald/money control /times of india
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন