উহানে কোরনা ভাইরাসের সংক্রমনের ঘটনা প্রকাশ্যে আনায় চীনে মহিলা সাংবাদিকের ৫ বছরের কারাদণ্ড হলো। সাজাপ্রাপ্ত এই সাংবাদিকের বিরুদ্ধে ভুয়া তথ্য ছড়ানোর অভিযোগে আগেই মামলা দায়ের করা হয়েছিল। বিচারে তাকে দোষী সাব্যস্ত করা হয়। সাংবাদিকের সাজার এই ঘটনায় চোখে আঙ্গুল দিয়ে আরও একবার দেখিয়ে দিলো চীনে মত প্রকাশের স্বাধীনতা নেই।
দ্য গার্ডিয়ান সূত্রে খবর, ধৃত সাংবাদিক ঝাং ঝা আগে ছিলেন আইনজীবী। আইনের পেশা ছেড়ে সাংবাদিকতার জগতে আসেন। ওহানে করোনা ভাইরাসের খবর করার ফলে, কয়েক মাস আগেই তাঁকে আটক করেছিল চিনা প্রশাসন। তারপর থেকেই বিগত ৬ মাস ধরে ওই মহিলা সাংবাদিক সংহাই এ বন্দি রয়েছেন।
চীনে সরকার বা প্রশাসনের বিরুদ্ধে কেউ মুখ খুললে বা সমালোচনা করলে অশান্তি পাকিয়ে সরকারকে সমস্যায় ফেলার অভিযোগ আনা হয়। উহানে কোভিডের খবর প্রকাশ আনায় ঝাং এর বিরুদ্ধে এই অভিযোগ আনা হয়েছিল। তার প্রেক্ষিতেই ৬ ছয় মাসের বেশি সময় ধরে একজন বিচারাধীন হিসেবে সাংহাইয়ে বন্দি রয়েছেন।
সরকারপক্ষের অভিযোগ অনুযায়ী, টুইটার উইচ্যাট এবং ইউটিউব কে কাজে লাগিয়ে লেখা ও ভিডিওর মাধ্যমে একাধিক সংবাদ মাধ্যমে সহ বিভিন্ন জনের কাছে তথ্য সরবরাহ করেছেন। অভিযোগ, উহান কে কোভিড-90 মহামারীর হটস্পট হিসেবে তুলে ধরে শ্রী রেডিও এশিয়া ও ইপোক টাইমসকে সাক্ষাৎকার দেন। এসব এর পরিপ্রেক্ষিতেই ঝাং ঝানের বিরুদ্ধে শাস্তির খাঁড়া নেমে আসে।
চীনের মানবাধিকার সংগঠন চাইনিজ হিউম্যান রাইটস ডিফেন্ডার্স সূত্রে খবর, ঝাং ঝান-কে একা নয়, কভিডের খবর করে চিনে একাধিক সাংবাদিকের হয়েছেন। ধৃতদের এবং তাদের পরিবারের উপর সরকারের তরফে যে হেনস্তার ঘটনা ঘটেছে তা নিয়েও খবর করেছিলেন ঝাং ঝান। টুইটার উইচেট ইউটিউব এর মাধ্যমেকে কাজে লাগিয়ে তা ছড়িয়ে দেন। স্বভাবতই চিনা সরকারের রোষানলে পড়েন এই মহিলা সাংবাদিক।
শুধু তাই নয় মানবাধিকার সংগঠন সূত্রে খবর, হংকং এর আন্দোলনকারীদের নিয়ে খবর করেন এর আগে ২০১৮ সালেও একবার ঝাং ঝানকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। গার্ডিয়ান জানাচ্ছে, করুনার খবর করতি উহানের গিয়ে চলতি বছর বউ সাংবাদিক গ্রেফতারের মুখে পড়েন। চলতি বছরও হংকং-এ জাতীয় নিরাপত্তা আইন কার্যকর হওয়ায়,সেখানেও একাধিক সাংবাদিক গ্রেফতার হয়েছিল।
২০১৯ এ ডিসেম্বরে চীনের উহানে প্রথম করোনা ধরা পড়ে। আর ক্রমশ তা ছড়িয়ে পড়ে গোটা বিশ্বে। চীনের উহান থেকেই করুনার সূত্রপাত বলে মনে করা হলেও, তা স্বীকার করেনি চীন। এমনকি এমন অভিযোগও উঠেছে উহানের ল্যাবেই জন্ম প্রাণঘাতী এই ভাইরাসের। চিন তা নাকচ করে দেয়। উল্টে চীন দাবি করে, তারাই প্রথম এই মরণ ভাইরাসের কথা উল্লেখ করে গোটা বিশ্বকে সতর্ক করে দেয়।
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন