বিগত কিছুদিন ধরে আপনারা শুনছেন এই শব্দটি কংগ্রেস টুলকিট (Congress Toolkit) । এই কংগ্রেস টুলকিট কি? ২৪ May দিল্লি পুলিশ রেড করে টুইটারের দিল্লি এবং গুরগাঁও এর অফিসে। তবে দিল্লি পুলিশের তরফ থেকে জানা যায় এটি শুধুমাত্র একটি রুটিন প্রসেস ছিল। রেড এর মতো বড় কিছু ব্যাপার ছিল না।
তাহলে এখন তো আপনাদের মনে এটাই আসছে কংগ্রেস টুলকিট কি। এর আগে কৃষক আন্দোলনের সময় এই টুলকিট শব্দটি প্রথম শোনা যায়। কিন্তু আবারো হঠাৎ করে কংগ্রেস টুলকিট এই শব্দটির আবির্ভাব কি করে হলো সেটাই আছে বলবো।
দিল্লি পুলিশ ২৪ মে সন্ধ্যায় হানা দেয় দিল্লি এবং গুরগাঁও এর টুইটার অফিসে। যে খবর সমনে এসেছে তাতে জানা যাচ্ছে BJP র কিছু নেতাদের পোস্টে Manipulated media( কারচুপি মিডিয়া) অর্থাৎ বলতে পারেন ভুঁয়ো খবরের ট্যাগ লাগিয়ে দিচ্ছিল স্বয়ং টুইটার। একই ট্যাগ লাগিয়ে দিয়েছিল টুইটার, সম্বিৎ পাত্র (Sambit Patra) এর পোস্ট করা কংগ্রেসের একটি টুলকিট এর পোস্টে। আর সেই জন্যেই দিল্লি পুলিশ পৌঁছে যায় দিল্লি টুইটারের অফিসে শুধুমাত্র এটা জানার জন্য যে ম্যানিপুলেটেড মিডিয়ার ট্যাগ কেন লাগানো হলো এই পোস্টে। টুইটারের দিল্লি অফিসে কাউকে না পেয়ে পৌঁছে যান গুরগাওন অফিসে।
এটার সঙ্গে যুক্ত আছে , যখন দুদিন আগে অর্থাৎ ২২ মে সরকারের তরফ থেকে ইনফরমেশন টেকনোলজি মন্ত্রক একটি নোটিশ পাঠায় টুইটারকে(Twitter) এবং ওয়ার্নিং (warning) দেয় , টুইটার যে সকল বিজেপি নেতাদের পোস্টে ম্যানিপুলেটেড মিডিয়া ট্রাগ লাগিয়েছে সেটি যেন সরিয়ে ফেলে । নোটিশে আরো লেখা থাকে যখন এর ইনভেস্টিগেশন চলছে যেটি এখনো পেন্ডিং আছে সেটা নিয়ে টুইটার কি করে মতামত দিতে পারে। কি করে দিতে পারে ম্যানিপুলেট মিডিয়া ট্যাগ। দিল্লি পুলিসের(Dilhi Police) কোথায় টুইটার যে বিজেপি কর্মীদের পোস্টে ম্যানুপুলেটেড মিডিয়া ট্যাগ লাগিয়েছে সেটি কতটা যথাযথ তার প্রমাণ কি আছে টুইটার এর কাছে। সেটাই যাচাই করতে দিল্লি পুলিশ যায় টুইটার অফিসে। কি তথ্য আছে টুইটারে কাছে এটাই জানা ছিল একমাত্র লক্ষ্য দিল্লি পুলিশের।
পুলিশ দিল্লির টুইটার অফিসে গেলেও করোনা প্যানডেমিক এর কারণে টুইটার অফিসে তেমন কোনো কর্মীর দেখা না মেলায় অফিসে নোটিশ দিয়ে ফিরে আসতে হয়। এটা নিয়ে অপজিশন পার্টি কংগ্রেস পুরোপুরি এটিকে অস্বীকার করে। তাদের কথায় এটি একটি হত্যা গণতন্ত্রের কণ্ঠরোধ করার পরিকল্পনা চলছে বিজেপির তরফ থেকে। সেখানে নানান টুইট দেখা গিয়েছে কংগ্রেসের তরফ থেকে। কিছু লোকের কোথায় যদি নোটিশ দেওয়ার থাকতো তাহলে মেল করতে পারত টুইটারকে। তাছাড়া ভারতীয় পোস্ট তো আছেই। এখানে সরাসরি পুলিশকে যাবার কোন দরকারই ছিল না। কেউ কেউ বলছেন পুলিশ পাঠানোর অর্থ হলো এটি টুইটার এর নিয়ন্ত্রণ করা। পুলিশ পাঠিয়ে টুইটারকে একটু হলেও চাপে রাখা।
An action to serve a notice can be done through email and post or with multiple police personnel. When it is the latter will create a sense of threat that goes beyond ordinary legal compliance (which itself is doubtful). It is signalling & not to be trivialised.
— Apar (@apar1984) May 24, 2021
কিন্তু এখনো পরিষ্কার না, এ কংগ্রেস টুলকিট(CongressToolkit) কি? এর জল্পনা শুরু হয় কোথা থেকে?
এটি শুরু হয় ১৮ মে থেকে বিজেপির সব নেতারা স্ক্রিনশট শেয়ার করতে থাকে যে স্ক্রিনশট এ কংগ্রেসের লেটার হেডে মোদী এবং অমিত শাহের ইমেজ কে নামিয়ে আনতে কংগ্রেসের এক নেতা রাজিব গৌড়া(Rajeev Gowda) একটি টুলকিট ছড়াচ্ছে সেটি দিয়ে স্ক্রিনশট ছিল। তারা কি বল দরকার এই টুলকিট কি? কেন এর নাম খারাপ হচ্ছে? টুলকিট শব্দটি কি খারাপ? তাহলে বলি টুলকিট হলো একটি কার্যতালিকা । যে কার্যতালিকা অনুসরণ করলে ঠিক লক্ষ্যে পৌঁছানো যায়। আর এখানে আরোপ বিজেপির তরফ থেকে যে মোদী এবং অমিত শাহ তথা বিজেপিকে পেছনে ফেলতে কংগ্রেস তার এই টুলকিট এর সাহায্য নিচ্ছে।
এই টুলকিটে কিছু শব্দ প্রয়োগ করা হয়েছে যেহেতু টুইটার একটি মাইক্রো ব্লগিং সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং সাইট। তাই এখানে এই হ্যাশট্যাগ গুলি ট্রেড করানো হলে মোদি তথা বিজেপিকে নিচু দেখানো যাবে। তারমধ্যে 'Modi Strain' যেটার মাধ্যমে করোনা এই মহামারীর সাথে করোনা স্ট্রেনের সাথে মিল খুঁজে পাওয়া যায়। তাছাড়া 'super spreader Kumbh' যেখানে কুম্ভ মেলা কে সুপার স্পাইডার অর্থাৎ সবথেকে বেশি করোনা ছড়ানোর জন্য প্রসিদ্ধ করা হয়েছে। 'PM CARES and Home Minister Amit Shah' পিএম কেয়ার্স ফান্ডকে নিয়েও বেশ জল্পনা উঠেছে। তাছাড়া এই টুলকিটে লেখা আছে মোদির জনপ্রিয়তা কম হচ্ছেনা কিভাবে তার জনপ্রিয়তা কমানো যায় কিভাবে সোশ্যাল মিডিয়ায় দৃষ্টি আকর্ষণ করা যায় ন্যাশনাল মিডিয়ায় হেডলাইন কিভাবে হতে পারে এইসব।
BJP is propagating a fake "toolkit" on “COVID-19 mismanagement” & attributing it to AICC Research Department. We are filing an FIR for forgery against @jpnadda & @sambitswaraj
— Rajeev Gowda (@rajeevgowda) May 18, 2021
When our country is devastated by COVID, instead of providing relief, BJP shamelessly concocts forgeries
তবে এই টুলকিটের বিরোধিতা করেছে কংগ্রেস। তাদের স্পষ্ট বক্তব্য এটা বিজেপির তৈরি তাদের প্রচার আরো বাড়ানোর জন্য। বিজেপির জনপ্রিয়তা দিন দিন কমছে তাই তাদের এসব বানাতে হচ্ছে। কংগ্রেস এই টুলকিট এর বিরোধিতা করে। বিজেপির বিরুদ্ধে মিথ্যে এলিগেশন লাগানো জন্য বিজেপি লিডার বিজেপি প্রেসিডেন্ট জেপিন আড্ডা এবং স্মৃতি ইরানি এর বিরুদ্ধে পুলিশ কমপ্লেন করেন। যেহেতু ছত্রিশগড়ে কংগ্রেস শাসিত সরকার তাই সেখানে পুলিশ কমপ্লেইন করে কংগ্রেস। তাছাড়া কংগ্রেসের যে লেটারহেড ইউজ করা হয়েছে সেটি পূর্বে দিল্লি পুলিশে দাখিল করা কংগ্রেসের কোন কেস থেকে। রাজিব গৌড়া এবং প্রিয়াঙ্কা গান্ধী ভাদরা দুইজনই তাদের প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে এই মিথ্যা ক্রিকেটের বিরুদ্ধে। তাদের দুজনের টুইট নিচে দেওয়া থাকলো।
তাছাড়া কংগ্রেস টুইটারকে এ লেটার লেখা এমন ধরনের যতগুলি টুইট আছে সে গুলোকে রিমুভ করা হোক এবং সেইসব প্রোফাইল গুলোকে সাসপেন্ড করা হোক। তো এখানে টুইটার কি করেছে সেটাই তো আগেই বললাম টুইটার এখানে সাসপেন্ড বা রিমুভ না করে টুইটার সেই পোস্ট গুলোর উপর ম্যানুপুলেটেড মিডিয়া ট্যাগ বসিয়ে দিয়েছে। আর সেখানেই হলো সমস্যা বিজেপির কথায় কোনরকম ইনভেস্টিগেশন না করে কি করে টুইটারে ম্যানিপুলেটেড মিডিয়া ট্যাগ দিল এই পোস্টগুলি উপর। আর সেই জন্যেই দিল্লি পুলিশ টুইটার অফিসে রেট বলুন ইনভেস্টিগেশন বলুন সেজন্য যায়।
আপনার মতামত জানান কমেন্ট বক্সে।
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন