টার্গেট থাকে ১৮ থেকে ১৯ বছরের মেয়ে। এই তালিকায় রয়েছে দেশ ও বিদেশী কিশোরীরা। শিকার মাধ্যমে হল ডেটিং অ্যাপস।ডেটিং অ্যাপস এর মাধ্যমে পরিচয় ঘটে ভারত নেপাল সহ বিভিন্ন দেশের কিশোরীদের সাথে।নানা কৌশলে তাদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্কে জড়ায় কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ার কে মিরাজুল আজম (২৮)। বন্ধুত্ব থেকে দ্রুতই তা গড়াই প্রেমের সম্পর্কে। তারপর আসে শারীরিক বিষয়। কিশোরীদের নগ্ন ছবি, ভিডিও নিয়ে পর্ন সাইটে বিক্রি করে এই যুবক।
সবশেষে ঘটনাটি ঘটে পার্শ্ববর্তী দেশের এই কিশোরীর সাথে। ভারতের উত্তরপ্রদেশের কানপুরের বাসিন্দা এই কিশোরী। তার তথ্যের প্রেক্ষিতে এ রাজধানীর মুগদায় অভিযান চালিয়ে কে এম মিরাজুল আযমকে গ্রেপ্তার করেছে সিটিটিসি'র সাইবার ক্রাইম ইনভেস্টিগেশন বিভাগ।কত কাল থেকে চার দিনের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে পুলিশ। জিজ্ঞাসাবাদের চাঞ্চল্যকর তথ্য দিয়েছে মিরাজুল।
CTTC র সূত্রে জানা গিয়েছে, দেশি বিদেশীগোয়েন্দা সংস্থার তথ্যের ভিত্তিতে সাইবার পেট্রোলিং করে শিশু-কিশোরদের পর্নোগ্রাফির খোঁজ পায় সাইবার ক্রাইম ইনভেস্টিগেশন বিভাগের সাইবার টেররিজম ইনভেস্টিগেশন টিম। ইনস্টাগ্রাম আইডি তে শিশু পর্নোগ্রাফি কন্টেন নিজে হেফাজতে রেখেছিলেন মিরাজুল আজম।তাছাড়া অনলাইনে উঠতি বয়সীদের সঙ্গে যোগাযোগ করে প্রাণ ছবি ও ভিডিও সরবরাহ করেছিল।একইভাবে কমবয়সীদের নানাভাবে ফুসলিয়ে নগ্ন ছবি ও ভিডিও দিতে উৎসাহি করছিল। এরই মধ্যে ভারত থেকে নিরুপায় হয়ে ঢাকার যোগাযোগ করে এক কিশোরী। ভার্চুয়াল বন্ধুত্ব থেকে প্রেম ও প্রতারণার বিবরণ দেয় মেয়েটি। তারপরই মাঠে নামে সাইবার টেরোরিজম ইনভেস্টিগেশন টিম।২৯ শেষ ডিসেম্বর সিটিটিসি র সিনিয়র সহকারী পুলিশ কমিশনার সাঈদ নাসিরুল্লাহ নেতৃত্বে মুগদা এলাকায় অভিযান চালিয়ে গ্রেপ্তার করা হয় মিরাজুল আযমকে।
তাকে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদে মিরাজুল স্বীকার করেছে অসৎ উদ্দেশ্যে দেশ বিদেশে অনেক তরুণের সঙ্গে অন্তরঙ্গ সম্পর্ক গড়ে তোলেন সে। তাদের একজন ভারতের ওই কিশোরী।প্রায় ছয় মাস আগে ভারতের কানপুরের ওই ছাত্রীর সঙ্গে একটি ডেটিং অ্যাপস এ পরিচয়। বন্ধুত্বের পর ব্যক্তিগত হোয়াটসঅ্যাপে যোগাযোগ হয় তাদের। ভিডিও কলে কথা হতো নিয়মিত। করোনার কারণেভারতে যাওয়া সম্ভব না হলেও ডিজিটাল যোগাযোগের মাধ্যমে পরস্পরের নৈকট্য নিয়ে যায়। ভিডিও কলে শারীরিক আকাঙ্ক্ষা পূরণের চেষ্টা করত। সেই ছবি ও ভিডিও সংগ্রহ করে রাখত মিরাজুল।
পারিবারিক ও ব্যক্তিগত কারণ দেখিয়ে গত দুই সপ্তাহ আগে ওই কিশোরী সম্পর্কের ইতি টানতে চায়। কিন্তু মিজারুল তাকে ছাড়বেনা কিছুতেই। এ নিয়ে বাক-বিতণ্ডা চলতে থাকে।বাধ্য হয়ে কিছুই তাকে ব্লক করে দেয় হোয়াটসঅ্যাপ থেকে। এবার ভিন্ন পথে চেষ্টা করে সে। বুয় নাম পরিচয় ব্যবহার করে ভিন্ন আইডি থেকে যোগাযোগ করে তার সঙ্গে। এবার প্রকাশ পায় মিরাজুল এর আসল চেহারা। ওই কিশোরীর কাছে দাবি করে ২লক্ষ ৫০হাজার ভারতীয় মুদ্রা। একটি একাউন নম্বর পাঠিয়ে এতে জমা দিতে বলে। নতুবা তার সংগ্রহে থাকা ওই কিশোরীর নগ্ন ছবি ও ভিডিও পর্নো সাইটে বিক্রি করে দেবে। এমনিকি সামাজিক বিভিন্ন মাধ্যমে ভাইরাল করা হবে তার ছবি। নিরুপায় হয়ে ওই কিশোরী বাংলাদেশের সিটিটিসির সাইবার ক্রাইম ইনভেস্টিগেশন বিভাগের হটলাইনে যোগাযোগ করে।
গ্রেপ্তার হওয়ার পর গোয়েন্দা সূত্রে ওই প্রযুক্তির মাধ্যমে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে তার বিরুদ্ধে পর্নোগ্রাফি নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা করে পুলিশ। গেপ্তার টিম মিরাজুল আজম মুগদা থানা এলাকার ২৮/এ দক্ষিণ মুগদাপাড়া কে এম সাইফুল আজম এর পুত্র। ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি থেকে কম্পিউটার সায়েন্স এন্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিষয়ে লেখাপড়া শেষে একটি প্রাইভেট কোম্পানীতে চাকরী করছিল মিরাজুল। দেশে করুণার প্রকোপ দেখা দিলে ওই চাকরি চলে যায়। তারপর থেকে বাসায় বসে বসে কিশোরীদের টার্গেট করে নগ্ন ছবি ও ভিডিও সংগ্রহ করত। নিয়মিত ব্রাউজ করতে পর্ণোগ্রাফি সাইট। বিভিন্ন দেশের কম বয়সী মেয়েদের ছবি ভিডিও রয়েছে তার সংগ্রহে। অল্পদিনে বিপুল অর্থের মালিক হতে হিন্দিও ইংরেজিতে দক্ষ কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ার মিরাজুল আজম এই অন্ধকার পথকে বেছে নেয়। এ বিষয়ে সিনিয়র সহকারী পুলিশ কমিশনার সাইদ নাসিরুল্লাহ মানবজমিনকে বলেন,গ্রেপ্তারের পর 4 দিনের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে তাকে। জিজ্ঞাসাবাদে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়া গেছে। এ পর্যন্ত কতজন কিশোরীর ভিডিও সংগ্রহ পর্ন সাইটে আপলোড করেছেন এসব বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে বলে জানানো হয় জানান তিনি।
কমেন্ট বক্সে আপনার মতামত জানান।
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন