"ঘুম থেকে উঠে দেখি বউ পালালো জানালা দিয়ে" টুম্পা সেই গান বাস্তবে পরিণত হল। কিন্তু এখানে বউ চলে গেল চুপচাপ, ঘুটঘুটে মালদাতে পাঁচিল টপকে! পুঁটলিতে গয়নাগাটি বেঁধে সেজে কোথায় চম্পার দিয়েছে, কেউ জানে না।বিয়ে ঠিক হয়ে যাওয়ার পরে কখনো কৃষ্ণনগর তো কখনো বেথুয়া ডহরি রেস্তোরাঁয় বসে হবু স্ত্রীর মনের খোঁজ পেতে চেয়েছিলেন যুবক। কাউকে ভালবাসেন কিনা, খোলাখুলি জানতে চেয়ে ছিলেন হবু স্ত্রীর কাছে। লজ্জায় মাথা নামিয়ে তখন পালিয়ে যাওয়া স্ত্রী বলেছিল, 'এমনটি কিছুই নেই'।
তারপর কি বাজলো সানাই, এক হল চার হাত। কিন্তু যুবকের হৃদয় ভাঙল শনিবার রাতে। নববধূ বিয়ের পর তাকে জানান, পছন্দের মানুষ রয়েছে তার। কিন্তু তাই বলে বিয়েতে পাওয়া সব গয়না নিয়ে তিনি চম্পট দেবেন, এমনটা ভাবতেও পারিনি যুবকটি। নবদ্দীপ থানায় বাবলারি পঞ্চায়েতের সুভাষ নগর গ্রামের যুবকটির পরিবার প্রথমে মান-সম্মানের কথা ভেবে কাউকে কথাটি বলেন নি। কিন্তু বৌভাত অনুষ্ঠান বাতিল হয় তখন সবাই সে কথা জেনে যায়। প্রতিবেশীরা অবশ্য পরিবারটির পাশে দাঁড়িয়েছে। তাদের বক্তব্য, স্বেচ্ছায় দ্রুত ফিরে না এলে ওই তরুণী বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ নেবে।
যুবককে সন্দেহ, সম্ভবত প্রাক্তন প্রেমিকের কাছে চলে গিয়েছে তরুণী। কেননা বাপের বাড়িতে তিনি যাননি। সোমবার সন্ধ্যায় নবদ্বীপ থানা দ্বারস্থ হয়েছেন যুবক। পুলিশকে জানিয়েছে, সকালে ঘুমিয়ে থাকা সম্ভবত ভোররাতে পাঁচিল টপকে পালিয়েছে তরুণী। গত ১০ তারিখে নাকাশীপাড়া থানায় বেথুয়াডহরি যুগপুর কলোনির সঙ্গে বিয়ে হয় যুবকের। রবিবার ছিল বৌভাত। কিন্তু তার আগেই ঘটে গেল এই বিপর্যয়। লজ্জায় নিজের নামটি প্রকাশ করতে চাইলেন না যুবক। কিন্তু তিনি বলেছেন,দুই বাড়ি থেকে মোট ৯ ভরি সোনার গয়না দেওয়া হয়েছিল নববধূকে। সব ধরনের নিয়ে পালিয়েছে নববধূ।
তবে যুবক জানায়, 'বিয়ের পাকা কথাবার্তা হয়ে যাবার পরে বিভিন্ন সময়ে কৃষ্ণনগর ও বেথুয়াডহরিতে গিয়ে ওর সঙ্গে দেখা করেছিলাম। কাউকে ভালোবাসে কিনা সেটা জিজ্ঞাসা করলেও তখন কিছু জবাব দেয়নি ও। সাথে সম্পর্ক নেই যে নেই বিয়ের পিঁড়িতে বসি। কিন্তু শনিবার রাতেই স্ত্রী আমাকে বলে, একজনের সঙ্গে ভালোবাসা আছে। তাই এই সংসার করতে পারবে না সে। রবিবার সকালে তিনি আমার বাড়িতে এসে মেয়ের সঙ্গে কথা বলবেন বলে জানান। আমি ঘুমিয়ে পড়ি'কিন্তু জামাইয়ের বাড়িতে সরাসরি পৌঁছানোর আগেই নববধূ চম্পট দেন।
পালানোর পর নববধূর বাপের বাড়ী যায়নি বলেও খোঁজ নিয়ে জেনেছেন যুবকের বাড়ির লোকজন। স্থানীয় পঞ্চায়েত প্রধান কমল দেবনাথ বলে, 'ওই মধুর সঙ্গে কারো কোন সম্পর্ক থাকলে বা বিয়েতে মত না থাকলে তিনি আগে জানালে ভালো করতেন। তাতে বরের বাড়ির লোকজনের মুখে এমন চুলকানি লাগত না। সোনার গয়না নিয়ে পালানোর অভিযোগ সত্যি হলে আইনি সাজা হওয়া উচিত'। নবদ্বীপ থানার পুলিশ জানিয়েছেন, নববধূ পালিয়ে যাওয়ার এই রকম একটি অভিযোগ এসেছে। তদন্ত শুরু করেছে নবদ্বীপ থানার পুলিশ। বউ পালানোর লজ্জায় দুঃখে শিখে গেছেন যুবক। এমনকি তার ভালোবাসার পুঁটলিটি খোয়া গিয়েছে।
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন