কৃ
ষি বিল নিয়ে বিতর্কে তো শেষ নেই। লাগাতার পথ অবরোধ জেলায় জেলায় মিছিল পদযাত্রা। এমনকি কৃষক নেতাদের অনশন। বিতর্ক কেন্দ্রে ৩টি কৃষি আইন। কিন্তু একটি ইটের মধ্যে ৩টের মধ্যে একটি এমন আইন লুকিয়ে আছে, যেটাতে কৃষকদের আদালতে গিয়ে ন্যায়বিচার পাওয়ার রাস্তায় বন্ধ করে দিয়েছে। কথা হচ্ছে,কৃষিজাত পণ্য বিপণন ও বাণিজ্যিক করণ আইন, ২০২০ নিয়ে। আইনি বিশেষজ্ঞদের মতে, নতুন আইনে এই ধারা সংবিধান বিরোধী। এই ধারা যদি বলবৎ হয়, আমলাতন্ত্রের বিরুদ্ধে সাধারণ মানুষের বিচার পাওয়ার সুযোগ থাকবে না।



তাহলে এই ১৩ নং ধারায় কি বলা হয়েছে, "কেন্দ্রীয় সরকার বা কেন্দ্রীয় সরকারি আধিকারিক,রাজ্য সরকার বা রাজ্য সরকারি আধিকারিক বা অন্য কারো বিরুদ্ধে এই ধারায় মামলা শুনানি অন্য মামলার মত হবে না। ধারা ১৫ য় বলা হয়েছে, এই ধারার কোনো মামলায় সিভিল কোর্টের কোন এক্তিয়ার আর থাকবে না। এই আইনে যে কর্তৃপক্ষকে অনুমোদন দেওয়া হবে, তিনি মামলায় অংশ নিতে পারবেন।, SDM আরও অতিরিক্তত জেলাশাসকের কাছে আর্জি দাখিল করা যাব।"



সরকারি পক্ষে যুক্তি, কৃষকদের কম খরচে, দ্রুত ন্যায়বিচারের জন্য এই ব্যবস্থা। এরপরে আদালতে না গিয়েই স্থানীয় স্তরে ৩০ দিনের মধ্যেই সমস্যার সমাধান পাওয়া সম্ভব। কিন্তু আইন বিশেষজ্ঞরা এ বিষয়টিতে সহমত নন। সুপ্রিমকোর্টের সিনিয়র এডভোকেট কেটিএস তুলসীর কথায়, এই ধারা আইন পথে ন্যায় বিচারের পথ বন্ধ করে দেবে। তাঁর কথায়, 'নতুন আইনে সিভিল কোর্টে যাওয়ার রাস্তা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। বিকল্প হিসাবে কোন ট্রাইবুনাল কোড বা রেকর্ডকেও শুনানির অনুমতি দেওয়া হয়নি। বরং বলা হয়েছে, SDM এবং ADM এর কর্তৃত্বে থাকবে। ভারতীয় সংবিধানে প্রত্যেক নাগরিকের অধিকারের কথা বলা আছে। সেটার থেকে কাউকে বঞ্চিত করা কখনোই সম্ভব নয়। কিন্তু এই আইন সিভিল কোর্টের এক্তিয়ার কেড়ে নেওয়া করার পাশাপাশিকোন ট্রাইবুনাল কোড এর বিকল্প না দেওয়ায় নেয় পাওয়ার অধিকার ক্ষুন্ন হয়েছে।' তিনি আরো বলেন, কৃষি রাজ্যের এক্তিয়ারভুক্ত বিষয়। রাজ্য সরকার কৃষি নিয়ে আইন বানাতে পারে, কিন্তু সে ক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় সরকার সংসদ এর মাধ্যমে কৃষি আইন বানিয়েছে, যেটি সংবিধান বিরোধী।





সুপ্রিম কোর্টের কৃষি আইন নিয়ে লড়াই করা আইনজীবী এপি সিং এর বক্তব্য, যেখানে জমিগত‌ বা সম্পত্তি নিয়ে কোন বিরোধ হলে সিভিল করে তার বিচার হয়। নয়া আইনে সেই রাস্তা পুরোপুরি বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে, আর সেটা সম্পূর্ণ অসংবিধানিক। কোন আইনেই সংবিধানের উপর হতে পারে না। আইন করে বিচার বিভাগের একটি আর খর্ব করা যায় না।  


এপি সিংয়ের স্পষ্ট বক্তব্য, কোনো নাগরিককে ন্যায়বিচার থেকে বঞ্চিত করা যায় না, 'এসডিএম বিচার বিভাগীয় কোন আধিকারিক নন। তিনি প্রশাসনিক আধিকারিক, তিনি কখনো বিচারবিভাগীয় বিকল্প হয়ে উঠতে পারেন না।' সরকার কৃষকদের সামনে যে প্রস্তাব রেখেছে তাতে বলা হয়েছে, সিভিল কোর্টে যাওয়ার বিকল্প পথ খুঁজতে রাজি সরকার। কেন্দ্রের বক্তব্য যে যে বিষয় নিয়ে কৃষকদের সংশয় রয়েছে, তার সবকটি পুনঃনির্বাচন করে দেখা হবে, কিন্তু কৃষকরা আলোচনা নয় আইন প্রত্যাহারের অনড়।



কৃষি আইন প্রয়োগের ক্ষমতা কেড়ে নিয়ে তাকে কাঙ্গাল করবে নাতো, না কৃষকই ভুল পথে এগোচ্ছে যেটা তাদের পরবর্তীতে আরও সমস্যায় ফেলবে?




কমেন্ট বক্সে আপনার মতামত জানান।






Post a Comment

নবীনতর পূর্বতন