তবে রাজ্য বিজেপি নেতাদের সায় নেই এই প্রস্তাবে। তার লক্ষণ বুঝতে পারছেন, বিধানসভা ভোটের ঠিক আগে স্বামীর প্রস্তাব দিয়ে বাংলা জুড়ে যে বিতর্ক শুরু হয়েছে, তাতে বিপাকে পড়তে পারেন তিনি। কারন, এমনিতেই বিজেপিকে বাঙালি বিরোধী বলে প্রচার শুরু করেছে তৃণমূল। এবার রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের লেখা জাতীয় সংগীত 'জনগণমন' পরিবর্তনের দাবি বিজেপি তৃণমূলের আসবে বলে অভিমত রাজ্য বিজেপির। তাদের চিন্তা আরো বাড়িয়ে বুধবার কোচবিহারের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন, 'কেউ বলছে জনগণমন পাল্টে দেবে। দেখি কার কি ক্ষমতা! দেখাক জনগণমন পাল্টে! ফলে উঠে যেতেই হচ্ছে রাজ্যের গেরুয়া শিবির কে।
সুব্রহ্মণ্যম স্বামী এর বিপক্ষে বিজেপির নেতা এবং রাজ্যসভার সংসদ স্বপন দাশগুপ্ত যেমন কোন রাখঢাক না করে বলেছেন, 'সুব্রহ্মণ্যম স্বামী র কথার কেউ সিরিয়াসলি নেয় না। উনি মাঝে মধ্যে এমন নানা রকম দাবি তুলে থাকেন।'দিলীপ ঘোষের কোথায়, 'এটা ওর ব্যক্তিগত মতামত। সেটা উনি বলতেই পারেন। তবে জাতীয় সংগীত পরিবর্তন করার নির্দিষ্ট নিয়ম আছে।'তবে জাতীয় সংগীতে স্বামীর অসুবিধা কিসের? ১৯৪৯ সলে ভারতের প্রথম রাষ্ট্রপতি রাজেন্দ্র প্রসাদ এর কথা টেনে এনে সিন্ধু শব্দটি কে সংশোধন করার কথা বলেছেন। যেহেতু সিন্ধু ভূখন্ড ভারতের মধ্যে পড়ে না সেহেতু এটাকে সংশোধনের দাবি চেয়েই মন্তব্য করেছেন ।
তবে সুব্রহ্মণ্যম এর বিকল্প প্রস্তাব, রবীন্দ্রনাথের 'জন গন মন' বদলে সুভাষচন্দ্র বসুর ইন্ডিয়ান ন্যাশনাল আর্মি বা আই এন এর গাওয়া 'শুভ সুখ চ্যয়ন' জাতীয় সংগীত হিসেবে ব্যবহার করা হোক। ১৯৪৩ তে নেতাজির নির্দেশে 'জন গন মন' আদলে আই এন এর দুই সদ্যস মুমতাজ হোসেন এবং কর্নেল আবিদ হাসান সাফরানি গানটা লিখেছিলেন।সুর দিয়েছিলেন ক্যাপ্টেন রাম সিং ঠাকুর। পরাধীন ভারতের নেতাজির অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের জাতীয় সংগীত ছিল এটি। শেষমেষ বাঙালি বিজেপির কপালে ভাঁজ পড়েয়েছে কিছুটা।
রাজ্য বিজেপির এক শীর্ষ নেতা মেনে নিচ্ছেন, সুব্রামানিয়াম স্বামীর মত কিছু নেতা তৃণমূলকে সুবিধা করে দিচ্ছে। এই অবস্থায় বিজেপি চাইছে না যে বাঙালির ভাবাবেগে কেউ আঘাত করুক। যার ফলস্বরূপ বাংলায় ভরাডুবি নিশ্চিত হয়ে যায় ।
নরেন্দ্র মোদী, অমিত শাহ বাংলায় এলেই রবীন্দ্রনাথের কথা বলেন, তাই দলের শীর্ষ নেতৃত্বেরতবে প্রকাশ্যে স্বামীর এই প্রস্তাবের বিরোধিতা করা হোক। রাজ্যের বিজেপি নেতার কথায়, 'রবীন্দ্রনাথের লাইন ধার করে আমরা এবার পশ্চিমবঙ্গের ক্ষমতায় আসবো, কিন্তু স্বামীর মত সোনার নেতা দলে থাকলে আর দেখতে হবে না।'
কমেন্ট বক্সে আপনার মতামত জানান।
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন