যেমন একটি শক্তিশালী রাজা তার আসে - পাসে থাকা দুর্বল রাজাদের উপর আক্রমণ করে ছিনিয়ে নেই তার রাজ্য । ঠিক জাকারবার্গের ও বর্তমান অবস্থা এমনই । জাকারবার্গ- এর কাছে 'একচেটিয়া ক্ষমতা' থাকা এবং অনৈতিক ভাবে ব্যবসা পরিচালনা করা নিয়ে খোদ মার্কিন মুলুকেই ক্ষোভ জমেছে দীর্ঘদিন ধরে। গতবছর মমতা ফাটিয়েছেন ফেসবুক সহ প্রতিষ্ঠিত ক্রিস হিউজেস । দ্য নিউ ইয়র্ক টাইমস কে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তার দাবি ছিল,"একই বাথটাবে থাকা বড় পিরানাহা মাছ ছোট মাছকে মনের আনন্দে খেলতে দেবে, এটা কল্পনা, দিবাস্বপ্ন। ব্যবসা বৃদ্ধির স্বার্থে বিগত বছরগুলোতে ক্রমাগত অসাধু পদ নিচ্ছেন মার্ক জুকারবার্গ ও বর্তমান ফেসবুক কর্তৃপক্ষ। এখন সময় হয়েছে হয়েছে নিয়ামক সংস্থাগুলি ফেসবুক কে ভেঙে দিক'।
প্রায় এক দশকেরও বেশি সময় ধরে অভিযোগের ফাইল জমে যাচ্ছিল প্রশাসনের টেবিলে।শেষ পর্যন্ত একেবারে আইন সংশোধন করে সংস্থাগুলিকে টুকরো করে তাদের ক্ষমতা ছেঁটে ফেলতে উদ্যোগী হল মার্কিন ফেডারেল ট্রেড কমিশন (FTC)। এফটিসি কর্তৃপক্ষ এবং পঞ্চাশের মধ্যে 48 টি মার্কিন প্রদেশের তরফেই ফেসবুক কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে একযোগে মামলা দায়ের করে জানানো হয়েছে,সোশ্যাল মিডিয়া ক্ষেত্রে অপ্রতিহত একাধিপত্য ছোট সংস্থাগুলোর কাছে দুটো পথই খোলা রেখেছিলেন জুকরবার্গ ও তাঁর পরিষদেরা, হয় নিজের সংস্থা ফেসবুকে তাদের বলা দামিই বেঁচে দাও। না হয় ঝাঁপ ফেলে বাজার থেকে নিজের রাস্তা দেখো। যার বিরুদ্ধে অবিলম্বে আইনানুগ পদক্ষেপ করতে হবে মার্কিন প্রশাসনকে।
এই ধরনের অভিযোগের কার্ড গড়ে ওঠা প্রথম বৃহৎ সংস্থা নয় ফেসবুক। এর আগে চলতি বছরে গুগলের মালিক সংস্থা অ্যালফাবেট ইনকরপোরেশনের বিরুদ্ধেও এইরকম মামলা দায়ের করেছে মার্কিন বিচার বিভাগ। সম্প্রতি গুগল ফেসবুক অ্যামাজন এবং অ্যাপেল এর মুখ্য আধিকারিকদের ডেকে পাঠায় মার্কিন কংগ্রেস এবং জবাবদিহি করে। সেখানে ডেমোক্রেট ও রিপাবলিকান দুই তরফের সাংসদেরই প্রশ্নের সম্মুখীন হতে হয় অ্যাপেল, অ্যামাজন, ফেসবুক এবং গুগোল কে। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের জামানায় যে হাতে গুনা ক্ষেত্রে একযোগে সরব হয়েছিলেন ডেমোক্রেট রিপাবলিকান সাংসদেরা এটি ছিল তার অন্যতম। সেই সূত্র ধরেই এবার মার্কিন মুলুকে আইন সংশোধন করে ভেঙ্গে ফেলা হতে পারে গুগল এবং ফেসবুকে।
এক ডেমোক্রেট সাংসদের দাবি,'আমাদের তদন্তে উঠে এসেছে এই দৈত্য কৃত সংস্থাগুলি দেশের প্রতিযোগিতা আইন লংঘন করছে ইচ্ছামত। ক্রমশ তাদের "গেটকিপার"ক্ষমতার অপব্যবহার করে লাগাম ছাড়া ফি চাইছে, দমনমূলক চুক্তি স্বাক্ষর করতে বাধ্য করছে। সংস্থাগুলি নিজেদের ক্ষমতা টিকিয়ে রাখতে সম্ভাব্য প্রতিযোগীদের হয় শেষ করে দিচ্ছে, নয়তো তাদের নকল করছে নতুবা অর্থের জোরে তাদের কিনে নিচ্ছে'।
আরও পড়ুন: ফের পাক হামলা, পাল্টা জবাবে মৃত ৫ পাক সেনা
আর এই ভাবি ফেসবুক ২০১২সালে, ১ বিলিয়ন ডলারের এবং ২০১৪তে, ২২ বিলিয়ন ডলারে হোয়াটসঅ্যাপ কিনে নিয়েছিল। এখনই দুটি সংস্থা কে ফেসবুক থেকে আলাদা করে দেওয়ার পক্ষপাতী তারা। আর সেটি হলে, প্রযুক্তি ক্ষেত্রে জুকারবার্গের সাম্রাজ্যের পতন শুরু হয়ে যাবে, মত বিশেষজ্ঞদের। কারণ ফেসবুকে বিজ্ঞাপন আয় অনেকটা কমে যাওয়াতেইন্সট্রাগ্রাম এবং হোয়াটসঅ্যাপ এর উপর অনেকটাই ভরসা করতে হচ্ছে ফেসবুক কর্তৃপক্ষকে।যদিও কর্মীদের পাঠানো এক ব্লগ পোস্টে জাকারবার্গ জানিয়েছেন ইনস্টাগ্রাম এবং হোয়াটসঅ্যাপের উপর ভিত্তি করে নতুন ই-কমার্স প্লাটফর্মে নামার পরিকল্পনা করছেন কতৃপক্ষ।
আপনার মতামত জানান কমেন্ট বক্সে।
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন